বয়স্কদের ওপর অক্সফোর্ড-এস্ট্রাজেনেকার টিকার কার্যকারিতা নিয়ে জার্মানির সন্দেহ সত্ত্বেও সব বয়সীদের জন্যই এটি ব্যবহারের অনুমোদন দিয়েছে ইউরোপীয় কর্তৃপক্ষ।
ইউরোপীয় মেডিসিন এজেন্সির (ইএমএ) সুপারিশের ভিত্তিতে শুক্রবার ইউরোপীয় কমিশন তাদের ২৭টি দেশে ভ্যাকসিনটি ব্যবহারের চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে। ইএমএ বলেছে, ক্লিনিক্যাল পরীক্ষায় কোভিড ১৯ এর বিরুদ্ধে ১৮ বছরের উপরের বয়সীদের জন্য টিকাটি নিরাপদ ও কার্যকর ছিল।
সম্প্রতি জার্মানির দুইটি সংবাদপত্রে প্রকাশিত রিপোর্টে বলা হয়, ৬৫ বছর বা তার বেশি বয়সীদের ক্ষেত্রে অক্সফোর্ডের ভ্যাকসিনের কার্যকারিতা মাত্র ৮ শতাংশ। তবে সেই দাবি উড়িয়ে দিয়েছিল অ্যাস্ট্রাজেনেকা। তারা জানিয়েছে, ৬৫ বছর বা তার বেশি বয়সীদের ক্ষেত্রেও তাদের টিকা সমান কার্যকর। তারপরেও জার্মানির ভ্যাকসিন কমিটি অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা ৬৪ বা তার কম বয়সীদের দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছে। বেশি বয়স্কদের ক্ষেত্রে টিকাটি সত্যিই কার্যকর কি না, তা নিয়ে সন্দেহ জানিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়নও।
তবে ইএমএ বলছে, ভ্যাকসিনটি বয়স্কদের ক্ষেত্রে ব্যবহার করা যাবে। ৫৫ বছরের উপরের মানুষের জন্যও এটি নিরাপদ ও কোভিডের কিছু প্রতিরোধ গড়ে তুলতে সক্ষম।
বিবৃতিতে সংস্থার বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, ‘‘বয়স্কদের ক্ষেত্রে কতটা কাজ করে সেই বিষয়ে সিদ্ধান্তে আসার মতো যথেষ্ট উপাত্ত এখনও নেই। তবে প্রতিরোধ গড়ে তোলাটাই প্রত্যাশিত। এই বয়সীদের ক্ষেত্রে যে ইমিউন বা রোগ প্রতিরোধের প্রতিক্রিয়া পাওয়া গেছে এবং অন্য টিকাগুলোর অভিজ্ঞতা থেকেই ইএমএ এমন আশা করছে।’’
তাদের এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে ব্রিটিশ-সুইডিশ প্রতিষ্ঠান এস্ট্রাজেনেকা। এ নিয়ে করোনার তিনটি টিকার অনুমোদন দিল ইউরোপ। এর আগে বায়োনটেক-ফাইজার ও মডার্নার টিকা ব্যবহারের অনুমোদন পায় ইইউ কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে।
ইউরোপীয় মেডিসিন এজেন্সির পরিচালক এমার কুক সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘‘এর কোনোটিই একেবারে ‘নিখুঁত' বা ভাইরাসের বিরুদ্ধে ‘জাদুর কাঠি' হিসেবে কাজ করবে এমনটা নয়।'' কিন্তু তারপরও মহামারি মোকাবিলায় সেগুলো একটি হাতিয়ার বলে উল্লেখ করেন তিনি।
এদিকে, টিকা সরবরাহে এস্ট্রাজেনেকা ইউরোপের সঙ্গে চুক্তির প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। প্রতিষ্ঠানটির কাছে এ বিষয়ে জবাব চেয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন। বেলজিয়ামে নিজেদের কারখানায় সমস্যার কারণে এস্ট্রাজেনেকা টিকার সরবরাহে রাশ টানার ঘোষণা দিলে এই পরিস্থিতি তৈরি হয়।
সূত্র: ডয়চে ভেলে
বিডি প্রতিদিন/জুনাইদ আহমেদ