শিরোনাম
২০ জানুয়ারি, ২০২২ ২০:৫২

চট্টগ্রামে ৭৫ শতাংশ রোগীর ওমিক্রন ভেরিয়েন্ট

রেজা মুজাম্মেল, চট্টগ্রাম

চট্টগ্রামে ৭৫ শতাংশ রোগীর ওমিক্রন ভেরিয়েন্ট

চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতাল এবং আগ্রাবাদ মা ও শিশু হাসপাতালে আগত কভিড পজিটিভ রোগীদের ৭৫ শতাংশই ওমিক্রন ভেরিয়েন্টে আক্রান্ত। ২০২১ সালের নভেম্বর-ডিসেম্বর এবং ২০২২ সালের জানুয়ারি মাসের প্রথম সপ্তাহের কভিড পজিটিভ রোগীদের জিনোম সিকুয়েন্সিং এ দেখা গেছে ২৫ ডিসেম্বরের পর থেকে আসা কভিড পজিটিভ রোগীদের ৭৫ ভাগই ওমিক্রন ভেরিয়েন্টে আক্রান্ত।  

সার্স কভ-২ এর জিনোম সিকুয়েন্সের আন্তর্জাতিক ডাটাবেস জার্মানির গ্লোবাল ইনিশিয়েটিভ অন শেয়ারিং অল ইনফ্লুয়েঞ্জা ডাটা’ (জিআইএসএইড) থেকে এই জিনোম সিকুয়েন্সগুলো প্রকাশিত হয়েছে।

জিনোম সিকুয়েন্সিং এর নেতৃত্ব দেন চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের করোনা ইউনিটের চিকিৎসক ডা. এইচএম হামিদুল্লাহ মেহেদী ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং এন্ড বায়োটেকনোলজি বিভাগের শিক্ষক ড. আদনান মান্নান।  

গবেষণায় বলা হয়, ৩০ জন রোগীর নমুনা থেকে করা জিনোম সিকুয়েন্সে দেখা যায়, গত ১ নভেম্বর থেকে ২৫ ডিসেম্বর ২০২১ পর্যন্ত আগত সব রোগীই ডেল্টা ভেরিয়েন্টে আক্রান্ত ছিল। এর মধ্যে নবজাতক হতে ৮০ বছরের বৃদ্ধ রোগীও ছিল। কিন্তু ২৫ ডিসেম্বর এর পরবর্তিতে পাওয়া ৭৫ ভাগ রোগী ওমিক্রনে আক্রান্ত। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল ২ জন রোগীর শরীরে ওমিক্রনের সাম্প্রতিকতম ধরন ‘বিএ২’ বা ‘স্টেলথ ওমিক্রন’, যা জানুয়ারির শুরু থেকে ছড়িয়ে পড়ছে কয়েকটি দেশে। যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাস ও হিউস্টন, ভারত, চীন ও ওমানে এই ভেরিয়েন্টটি পাওয়া গেছে। এই নতুন প্রকরণটি খুব বেশি বিপদজ্জনক নয় বলে জানান গবেষকেরা। তবে এটির স্পাইক প্রোটিনে বেশ কিছু নতুন পরিবর্তন আছে, যা এটি শনাক্তকরণকে দুরূহ করে ফেলতে পারে বলে ইতিপুর্বে মন্তব্য করছে যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল (সিডিসি) এর গবেষকেরা।

গবেষক ডা. এইচএম হামিদুল্লাহ মেহেদী বলেন, ‘চট্টগ্রামে এটিই প্রথম ‘বিএ২’ শনাক্তকরণের তথ্য। ওমিক্রনে আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি দেখা গেছে গলা ব্যথা ও গলার স্বর বিকৃত হয়ে যাওয়া, ৯০ ভাগ রোগীর মধ্যেই এই লক্ষণ পরিলক্ষিত হয়েছে। ৮৫ ভাগের মধ্যে শরীরের বিভিন্ন অংশে ব্যথা ও মাথা ব্যথা এবং ৮০ ভাগের জ্বর পরিলক্ষিত হয়েছে। ওমিক্রনে আক্রান্ত সবার বয়স ২১ বছরের উর্ধ্বে, শিশু ও কিশোরদের মধ্যে এখনও তা শনাক্ত হয়নি। তবে চট্টগ্রামের ওমিক্রনে আক্রান্তদের নিয়ে এত অল্প নমুনার বিশ্লেষণে কোনো উপসংহারে আসা সম্ভব নয়। এর জন্য আরও অন্তত কয়েকশত জিনোম সিকুয়েন্স করলে এর চরিত্র নিয়ে ধারনা পাওয়া যাবে।’

গবেষণায় সহপ্রকল্প পরিচালক ছিলেন জেনারেল হাসপাতালের সিনিয়র কনসালটেন্ট ডা. আব্দুর রব মাসুম, মা ও শিশু হাসপাতালের মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের অধ্যাপক ডা. সঞ্জয় বিশ্বাস এবং ডা. নাহিদ সুলতানা, আইসিডিডিআরবি’র ভাইরোলজি বিভাগের বিজ্ঞানী ড. মুস্তাফিজুর রহমান এবং ড. মোহাম্মদ এনায়েত হোসেন। সহায়তা ও পৃষ্ঠপোষকতায় আছে কানাডার ডালহৌসি বিশ্ববিদ্যালয়ের ল্যাবরেটরি অব ইমার্জিং ইনফেকশাস ডিজিজ। তথ্য উপাত্ত বিশ্লেষণের দায়িত্বে আছেন অধ্যাপক ডেভিড কেলভিন এবং আব্দুল্লাহ মাহমুদ আল রাফাত। সহকারী গবেষক ছিলেন চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের ডা. রাজদ্বীপ বিশ্বাস, ডা. মিনহাজুল হক এবং মা ও শিশু হাসপাতালের শিশু বিশেষজ্ঞ ডা. ফাহিম হাসান রেজা। সিকুয়েন্সিং এর সামগ্রিক তত্ত্বাবধানে আছেন আইসিডিডিআরবি’র ভাইরোলজি ল্যাবরেটরির বিজ্ঞানীরা। 

বিডি-প্রতিদিন/সালাহ উদ্দীন

সর্বশেষ খবর