বুধবার, ৩ আগস্ট, ২০২২ ০০:০০ টা

নওগাঁয় সোনালি আঁশ সংগ্রহে ব্যস্ত চাষিরা

বাবুল আখতার রানা, নওগাঁ

নওগাঁয় সোনালি আঁশ সংগ্রহে ব্যস্ত চাষিরা

উত্তর জনপদের শস্যভান্ডারখ্যাত নওগাঁয় চলতি পাট মৌসুমে জেলার বিভিন্ন এলাকায় পাট কাটা, জাগ দেওয়া ও পাটকাঠি থেকে পাট ছাড়ানোর কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন কিষান-কিষানিরা। বিগত কয়েক বছরের তুলনায় এবার পাটের দাম বেশি হওয়ায় কৃষকের মুখে ফুটেছে হাসির ঝিলিক। জানা গেছে, অন্য বছরের তুলনায় এবার সময় মতো পর্যাপ্ত বৃষ্টিপাত না হওয়ায় পাট কেটে তা বিভিন্ন জলাশয়ে জাগ দেওয়া নিয়ে হতাশায় ছিলেন কৃষক। পানির অভাব হলেও চাষিরা পাট কেটে তা নদীনালা, খাল, বিল ও ডোবায় জাগ দেওয়া, আঁশ ছাড়ানো এবং হাটে-বাজারে তা বিক্রিসহ সব মিলিয়ে এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন। আবার কোথাও কোথাও দেখা গেছে নারী-পুরুষের অংশগ্রহণে পাট থেকে আঁশ ছাড়ানোর কাজ চলছে। অনেক স্থানে কৃষক খরচ বাঁচাতে রিবোন রেটিং পদ্ধতিতে আঁশ ছাড়ানোর জন্য কৃষি বিভাগ কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করলেও কৃষকরা তাতে আগ্রহী নয়। এবার জেলায় লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে অনেক বেশি জমিতে পাট চাষ করা হয়েছে। পাট চাষের শুরুতে বৃষ্টিপাত কম থাকায় অনেক স্থানে চাষ কিছুটা দেরিতে শুরু হলেও ফলন ভালো হয়েছে। ভালো ফলন হওয়ায় কৃষক খুশি হয়েছে। কৃষকের মুখে এখন হাঁসির ঝিলিক। বর্তমানে ভালো মানের পাটের মূল্য ৩ হাজার টাকা মণ ও নিম্নমানের পাট ২ হাজার ৮০০ টাকা দরে বিক্রয় হচ্ছে। ফলে ন্যায্যমূল্য পেয়ে পাট চাষিদের মাঝে এখন পাট চাষে আগ্রহ বাড়ছে। আত্রাই উপজেলার ভোঁপাড়া গ্রামের কৃষক মজিবর আলী জানান, ৯ বিঘা জমিতে পাট চাষ করেছিলাম। পাটও ভালো হয়েছে এবং অন্য বছরের তুলনায় দাম বেশি হওয়ায় লোকসানে পড়তে হচ্ছে না। একই উপজেলার তারাটিয়া গ্রামের কৃষক আবদুস ছামাদ জানান, মৌসুমের শুরুতে বৃষ্টি না হওয়ায় পাট নিয়ে দুশ্চিন্তায় ছিলাম। তবে পরে বৃষ্টি হওয়ায় ফলন ভালো হয়েছে।

 এবার আমি চার বিঘা জমিতে পাট চাষ করেছিলাম। বাজারে পাটের মূল্য বেশি হওয়ার কারণে আগামী বছর আরও বেশি জমিতে পাট চাষ করব। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের ভারপ্রাপ্ত উপ-পরিচালক মুনজের-এ মাওলা জানান, এবার গত বছরের তুলনায় আমাদের এলাকায় পাটের আবাদ অনেক বেশি হয়েছে। আশা করছি বাম্পার ফলন হবে। এলাকার কৃষকরা যাতে পাট যথাযথভাবে উৎপাদন করতে পারে এবং স্বল্প খরচে উচ্চ ফলনশীল পাট উৎপাদন করতে পারে এজন্য আমরা প্রতিনিয়ত কৃষকদের নিকট গিয়ে পরামর্শ প্রদান করছি। বিভিন্ন রোগবালাই থেকে পাটকে মুক্ত রাখতেও পরিমিত পরিমাণ ওষুধ প্রয়োগের পরামর্শ দিয়ে আসছি। পাটের ফলনও হয়েছে বাম্পার। অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার পাটের দামও অনেক বেশি। পাটের ন্যায্যমূল্য পেলে চাষিদের মাঝে পাট চাষে আগ্রহ বাড়বে বলে মনে করেন তিনি।

সর্বশেষ খবর