টানাটানির সংসারে ৪০ শতক জমিই ছিল শেষ ভরসা। সেই জমিতে বিভিন্ন জাতের সবজি আবাদ করে নিজেকে সফল চাষি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছেন জোহরা বেগম। কখনো কখনো লোকসান হলেও থেমে যাননি তিনি। আবার চাষাবাদ শুরু করেছেন নতুন উদ্যমে। এবারে প্রথমবারের মতো পরিবেশবান্ধব পলিথিন দিয়ে মালচিং পদ্ধতিতে করলা চাষ করে তিনি এলাকার সবাইকে চমকে দিয়েছেন। তাকে দেখে অনেকে এই পদ্ধতিতে সবজি আবাদে আগ্রহ দেখাচ্ছেন।
কুড়িগ্রামে রাজারহাট উপজেলার মিরেরবাড়ী এলাকার বাসিন্দা জোহরা বেগম। তিনি জানান, জীবনে অনেক কষ্ট করেছি। খেয়ে না খেয়ে দিন পার করছি। যখন চাষাবাদে যুক্ত হলাম তখন থেকে সংসারের অভাব কিছুটা দূর হওয়া শুরু করল। এই সবজি বিক্রি করেই অল্প অল্প করে টাকা জমিয়ে তিন মেয়ের বিয়ে দিয়েছি। এখন দুই ছেলেকে নিয়ে ভালোভাবে দিন কাটছে। জোহরার এবার নতুন সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে মালচিং পদ্ধতিতে সবজি চাষে। পরিবেশবান্ধব পলিথিন দিয়ে এই প্রথম করলা চাষ করেছেন তিনি। স্থানীয় একটি বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা তাকে সাহায্য করে। ১০ হাজার টাকা সহায়তা নিয়ে তিনি এ কাজে নামেন। বাঁশ কিনে স্বামী-ছেলেসহ জাংলা তৈরি করেন। জমির চারপাশে ২ হাজার টাকা ব্যয়ে নেট দিয়ে ঘিরে ফেলেছেন। নিজেরাই নিড়ানিসহ জমির পরিচর্চা করেছেন। জোহরা জানান, নিজেরা শ্রমিকের কাজ করেছি। ফলে বেশি খরচ হয়নি। মাত্র ৭ হাজার টাকায় জমি তৈরি করতে পেরেছি। অন্য করলার চেয়ে মালচিং পদ্ধতিতে করলা এক মাস আগেই তোলা যায়। শুরুতে তিনি ২ হাজার ৪০০ টাকা মণ দরে করলা বিক্রি করেছেন। প্রতি সপ্তাহে দুই থেকে তিন মণ বিক্রি করতে পারছেন। মাত্র তিন মাসে এখন পর্যন্ত ৫০ হাজার টাকার করলা বিক্রি করেছেন। আর ২-৩ মাস এই করলা বিক্রি করতে পারবেন।