ছাত্রীদের ক্লাকমেইলিং করে জোরপূর্বক শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন ও ভিডিও ধারণ করার অপরাধে কুষ্টিয়ায় আলোচিত সেই স্কুল শিক্ষক হেলাল উদ্দিন ওরফে পান্না মাস্টারের ১০ বছর কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত। একই সাথে দেড় লাখ টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরো ৬ মাসের কারাদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে ৪টায় চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মাহমুদা বেগম এ রায় প্রদান করেন। মামলায় অন্য তিন আসামীকে বেকসুর খালাস দিয়েছে আদালত। ৫ আসামির মধ্যে একজন আগেই মারা গেছেন।
কারাদণ্ডপ্রাপ্ত পান্না মাস্টার সদর উপজেলার হরিপুর গ্রামের তসলিম উদ্দিনের ছেলে। ঘটনার পর পান্না তিনি পালিয়ে যান। ঢাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। পরে থেকে তিনি জেলে আছেন।
আদালতের সরকারি পক্ষের আইনজীবী অতিরিক্ত পিপি এএসএম আসাদুজ্জামান মামুন জানান, কুষ্টিয়া শহরতলির আদর্শ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক হেলাল উদ্দিন ওরফে পান্না মাস্টার একই বিদ্যালয়ের একাধিক ছাত্রীকে প্রাইভেট পড়ানোর নামে ব্লাকমেইলিং করে শারিরীক সম্পর্ক স্থাপনে বাধ্য করে। একই সাথে শারিরীক সম্পর্কের দৃশ্য গোপনে ভিডিও ধারণ করে নিজের ল্যাপটপে সংরক্ষণ করে পান্না মাস্টার। পরে এসব ভিডিওয়ের ভয় দেখিয়ে দিনের পর দিন ছাত্রীদের সাথে শারিরীক সম্পর্ক চালিয়ে আসছিলেন তিনি।
২০১৩ সালের এপ্রিল মাসে কয়েকজন ছাত্রী বিষয়টি বাড়িতে অভিভাবকদের জানিয়ে দিলে গোপন ফাঁস হয়ে যায। এরপর বিষয়টি গোটা কুষ্টিয়ায় ঝড় তোলে। পান্না মাস্টারের ল্যাপটপে সংরক্ষিত এসব ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়ে। আন্দোলনের মুখে পুলিশ পান্না মাস্টারের ল্যাপটপ জব্দ করে। পরে পুলিশ বাদী হয়ে ওই বছরের ৭ জুলাই কুষ্টিয়া মডেল থানায় মামলা করেন। মামলায় পান্না মাস্টারসহ ৫ জনকে আসামি করা হয়। মামলার অন্য আসামীরা হলেন প্রকৌশলী আলিমুজ্জামান টুটুল, মনিরুল ইসলাম মনো, আওলাদ হোসেন ও শরিফুল ইসলাম সজল।
দীর্ঘদিন মামলার শুনানি চলার পর বৃহস্পতিবার চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক রায় প্রদান করেন। রায়ে পান্না মাস্টারকে পর্নগ্রাফী নিয়ন্ত্রণ আইন-২০১২ এর দুটি ধারায় ৫ বছর করে ১০ বছরে জেল ও দেড় লাখ টাকা জরিমানা করা করে। আনাদায়ে আরো ৬ মাসের কারাদণ্ডের আদেশ দেন বিচারক।
এ সময় আদালত প্রকৌশলী আলিমুজ্জামান টুটুল, মনিরুল ইসলাম মনো ও আওলাদ হোসেনকে বেকসুর খালাস দেয়। মামলার আরেক আসামি প্রকৌশলী শরিফুল ইসলাম সজল বছর খানেক আগে মারা গেছেন।
বিডি-প্রতিদিন/১৭ ডিসেম্বর, ২০১৫/মাহবুব