দিনাজপুরে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। জেলার সবক’টি নদীর পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। শহররক্ষা বাঁধ ভেঙে প্লাবিত হয়েছে শহরের বিভিন্ন এলাকা। দিনাজপুর-ঢাকা মহাসড়কের বেশ কিছু এলাকা প্লাবিত হওয়ায় যান চলাচলও বন্ধ রয়েছে।
শহরের বেশির ভাগ এলাকাসহ রেললাইনের ওপরে পানি আসায় বিভিন্ন রেলরুটে বন্ধ রয়েছে রেল যোগাযোগ। জেলা প্রশাসন পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য প্রায় সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করছে।
জেলায় বন্যার পানিতে ডুবে রবিবার রাত থেকে সোমবার সকাল পর্যন্ত আরও চারজনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানা যায। এর আগে রবিবার ৯ জনের মৃত্যু হয়।বিভিন্ন উপজেলার বন্যার্ত মানুষের পানির সংকট দেখা দিয়েছে। বিভিন্ন সংগঠন বানভাসিদের মাঝে শুকনা খাবার বিতরণ করেছে।
জেলার বিভিন্ন সড়কে বাস-ট্রাকসহ বড় যানগুলো চলাচল করলেও অন্যান্য জেলার সঙ্গে দিনাজপুরের রেল যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে রবিাবর দুপুর থেকে।
পার্বতীপুর-দিনাজপুর রেললাইনের বিভিন্ন জায়গা পানি ওঠায় এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয় বলে জানিয়েছেন দিনাজপুর রেলস্টেশন সুপার গোলাম মোস্তফা।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-সহকারী প্রকৌশলী সিদ্দিকুজ্জামান খান বলেন, সোমবার সকালে পুনর্ভবা নদীর পানি বিপৎসীমার ৮০ সেন্টিমিটার ওপরে রেকর্ড করা হয়েছে। তবে রবিবার রাতে নতুন করে পানি বাড়েনি।
সরেজমিনে দিনাজপুর শহরের বেশির ভাগ এলাকায় পানি দেখা গেছে। শহরের প্রধান এলাকা বালুবাড়ি, উপশহর, খালপাড়া, মালদহ পট্টি, চকবাজার, নিমতলা, মির্জাপুর, শেখপুরা, ঈদগাঁহ বস্তি এলাকা প্লাবিত হয়েছে।
পুনর্ভবা নদীর শহর রক্ষা বাঁধ ভেঙে ও আত্রাই নদীর বাঁধভাঙা পানি ঢুকে দিনাজপুর পৌরসভার ১২টি ওয়ার্ডের প্রায় সবাই পানিবন্দী হয়ে পড়েছে বলে জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে।
এদিকে দিনাজপুর রেলস্টেশনের সুপার গোলাম মোস্তফা জানান, পার্বতীপুরের বিভিন্ন অংশে রেললাইন ডুবে যাওয়ায় রবিবার দুপুরের পর থেকে সারাদেশের সঙ্গে দিনাজপুরের রেল যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে।
জেলা প্রশাসন পানিবন্দি মানুষকে উদ্ধারের জন্য ইতোমধ্যে কাজ শুরু করেছে সেনাবাহিনী। উদ্ধার কাজের পাশাপাশি জেলায় দুর্গতদের জেলা প্রশাসকের নিজস্ব তহবিল থেকে এক লাখ ১০ হাজার টাকা ও ৬৭ মেট্রিকটন চাল বরাদ্দ করা হয়েছে। এছাড়া ৫০ লাখ টাকা ও ৩০০ মেট্রিকটন চাল বরাদ্দ চেয়ে ত্রাণ মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. সাইফুজ্জামান জানান, জেলার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে বন্যার্তদের আশ্রয় কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে।
বিডি-প্রতিদিন/১৪ আগস্ট, ২০১৭/মাহবুব