সিরাজগঞ্জে যমুনা নদীর পানি অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। ১৯৮৮ সালের পর এবারই প্রথম যমুনার পানি বিপদসীমার ১১১ সেমি উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানি আরো বাড়বে বলে সিরাজগঞ্জ পাউবো কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। পানি বৃদ্ধির ফলে জেলার কাজিপুর, সদর, বেলকুচি, চৌহালী ও শাহজাদপুর উপজেলার ৪০টি ইউনিয়নের দুই শতাধিক গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। মাত্র তিন দিনের ব্যবধানে ৪০ হাজার পরিবারের আড়াই লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন। অনেকে ওয়াপদা বাঁধে আশ্রয় নিয়েছেন। দুই হাজার হেক্টর ফসলের জমি পানিতে তলিয়ে গেছে। পানিবন্দী মানুষের মাঝে জেলা প্রশাসন থেকে ১৭০ মেট্টিক টন চাল ও নগদ সাড়ে আট লক্ষ টাকা বিতরণ বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত তা বন্যা কবলিতদের হাতে পৌছেনি।
শুভগাছা টুটুলের মোড় এলাকার বাসিন্দা জানান, বসতবাড়ি একেবারে তলিয়ে গেছে। ঘরের মধ্যে গলা পানি। কোন জিনিসপত্র বের করতে পারি নাই। কয়েকটি টিন খুলে এনে ওয়াপধা বাঁধে আশ্রয় নিয়েছি। একই গ্রামের বয়োবৃদ্দ জানান, সকিতন ভেওয়া, শীলা খাতুন, আফজাল হোসেন ও আব্দুল কুদ্দুস জানান, ঘরবাড়ি ভেঙ্গে গেছে। যাওয়ার মত জায়গা নেই। তাই ওয়াপদার ধারে পলিথিন টাঙ্গিয়ে কোন মতে জীবনযাপন করছি। বৃষ্টির কারণে সময় মত রান্নাও করতে পারি না। অনেক সময় না খেয়েও থাকতে হচ্ছে।
জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা আব্দুর রহিম জানান, ইতোমধ্যে ৫ উপজেলায় ১৭০ মেট্টিক টন চাল ও সাড়ে ৮ লক্ষ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।যা আজকের মধ্যেই বিতরণ করা হবে।
জেলা প্রশাসক কামরুন নাহার সিদ্দিকা জানান, নদীর পানি বেড়েই চলেছে। কোন অবস্থাতেই যেন বাঁধ এলাকায় কোন ধ্বস বা ভাঙ্গন সৃষ্টির পরিস্থিতি না হয়, সে জন্য পাউবোকে সতর্ক অবস্থানে থাকতে বলা হয়েছে। তারপরেও তাৎক্ষনিক পরিস্থিতি মোকাবেলার জন্য সেনাবাহিনীকে চিঠি দিয়ে অবহিত করে রাখা হয়েছে। সর্বোপরি বন্যা পরিস্থিতি মোকাবেলার জন্য সকল প্রকার প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। ১৬৬টি আশ্রয় কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। চরাঞ্চলের মানুষের জন্য শুকনো খাবার, মোমবাতি, দেয়াশলাই প্যাকেট ইতোমধ্যে প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সৈয়দ হাসান ইমাম জানান, সিরাজগঞ্জ পয়েন্টে বিপদসীমার ১১১ সে.মি মিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। বাঁধগুলো ঝুকিপূর্ণ হওয়ায় সার্বক্ষনিক নজরদারিতে রাখা হয়েছে।
বিডি প্রতিদিন/এ মজুমদার