চোরকে চিনে ফেলায় মা ও মেয়েকে হত্যা

বগুড়া সদরের নামুজা ভান্ডারিপাড়ায় মা ও মেয়ে হত্যার রহস্য উদঘাটিত হয়েছে। জানালার রড ভাজ করে ঘরে ঢুকে ৭৭০ টাকা, মোবাইল ফোন ও কানের দুল চুরি করে নিয়ে যাবার সময় চিনে ফেলায় দুর্বৃত্তরা গলায় ওড়নার ফাঁস এবং মুখে বালিশ চাপা দিয়ে তাদের হত্যা করে। 

ওই ঘটনায় গ্রেফতার হওয়ায় রেজাউল করিম (৪০) সোমবার বিকালে অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দিয়েছেন। তবে তদন্তের স্বার্থে পুলিশ অন্য ঘাতকদের নাম, পরিচয় ও সংখ্যা প্রকাশ করতে রাজি হয়নি।

মঙ্গলবার দুপুরে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা বগুড়া সদর থানার ওসি (তদন্ত) আসলাম আলী জানান, গত ২৮ আগস্ট রাতে নামুজা ভান্ডারিপাড়ার ভাড়া বাসায় গৃহবধূ কাপিয়া আকতার ও তার শিশু কন্যা আয়েশা খাতুন খুন হন। পরদিন রাতে ঘর থেকে তাদের লাশ উদ্ধার করা হয়। এ ব্যাপারে কাপিয়ার ভাই আবদুল মোমিন অজ্ঞাতদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন। তদন্ত করতে গিয়ে নামুজা ভান্ডারিপাড়ার মৃত আবদুর রহমানের ছেলে মাদকসেবী রিকশাচালক রেজাউল করিমের নাম উঠে আসে। গত ৩ সেপ্টেম্বর রবিবার গোপনে খবর পেয়ে কাহালু উপজেলার বনবোনাই গ্রামে শ্বশুরবাড়ি থেকে রেজাউলকে গ্রেফতার করা হয়। এরপর পুলিশের ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদে সে হত্যার দায় স্বীকার ও অন্যদের নাম প্রকাশ করে। সোমবার বিকেলে তাকে অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শ্যাম সুন্দর রায়ের আদালতে হাজির করলে সে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তি দেয়।

রেজাউলের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী গত ২৮ আগস্ট রাতে সে কয়েকজন সঙ্গিসহ কাপিয়া আকতারের বাড়িতে চুরি করতে যায়। জানালার রড ভাজ করে ঘরে ঢোকে। এ সময় কাপিয়া ও তার মেয়ে আয়েশা ঘুমিয়ে ছিলেন। তারা মোবাইল ফোনের লাইট দিয়ে ঘরের ড্রয়ারে থাকা ৭৭০ টাকা ও কানের দুল ও অন্যস্থানে থাকা একটি মোবাইল ফোন চুরি করে। যাবার সময় ঘুমন্ত কাপিয়া টের পেয়ে এগিয়ে এলে তাকে ধাক্কা দেওয়া হয়। তিনি খাটের উপর পড়ে গেলে মাথায় আঘাত পান। চিৎকার করার চেষ্টা করলে সকলে মিলে গলায় ওড়নার ফাঁস ও মুখে বালিশ চাপা দিয়ে তাকে হত্যা করা হয়। এ সময় আয়েশা জেগে চিৎকার দিলে তাকেও গলায় ওড়নার ফাঁস ও মুখে বালিশ চাপা দিয়ে হত্যা করে তারা পালিয়ে যায়। 

তদন্তকারী কর্মকর্তা বলেছেন, অন্য খুনিদের নাম, পরিচয় পাওয়া গেছে। কিন্তু তদন্তের স্বার্থে এখনই প্রকাশ করা সম্ভব হচ্ছে না। তাদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে। স্বীকারোক্তি দেবার পর রেজাউল করিমকে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে।

বিডি প্রতিদিন/৫ সেপ্টেম্বর ২০১৭/হিমেল