ঈদের আমেজ শেষ। গত ৪ সেপ্টেম্বর সরকারি-অফিস আদালত খুলেছে। সব কিছু প্রায় স্বাভাবিক সময়ের মতো। কিন্তু এখনও ঈদের কথা বলে বাড়তি ভাড়া আদায়ের অভিযোগ উঠেছে বরিশালের অভ্যন্তরীণ রুটে চলাচলকারী বাস কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। ঈদ বকশিস এবং ঈদে শ্রমিক-কর্মচারীদের বোনাস দেওয়ার কথা বলে যাত্রীদের কাছ থেকে এক প্রকার জুলুম করে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করা হচ্ছে। আবার কোন যাত্রী পথিমধ্যে নেমে গেলেও তার কাছ থেকে পুরো পথের ভাড়া আদায়ের অভিযোগ করা হয়েছে। এ নিয়ে প্রতিনিয়ত যাত্রীদের সাথে বাদানুবাদে জড়াচ্ছে বাসের সুপারভাইজারগণ। কোন যাত্রী এর প্রতিবাদ করতে গেলে তাকেও নাজেহাল করে ছাড়ছে তারা।
যদিও বাসে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় বন্ধে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করার কথা বলেছেন বরিশালের জেলা প্রশাসক মো. হাবিবুর রহমান। বাসের ভুক্তভোগী যাত্রী বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা ফয়সল মাহমুদ রুমি বলেন, বরিশাল থেকে পটুয়াখালীর বাস ভাড়া ৮০ টাকা। কিন্তু বাসগুলো ঈদের ৩-৪দিন আগে থেকে বোনাস আর বখশিসের কথা বলে ৮০ টাকার স্থলে বরিশাল-পটুয়াখালী রুটে ১০০ টাকা ভাড়া আদায় করছে। আজ অভ্যন্তরীণ রুটের একটি বাসে পটুয়াখালী থেকে বরিশাল আসেন রুমি।
শহীদুল ইসলাম নামে আরেক ভুক্তভোগী বাস যাত্রী বলেন, বরিশাল থেকে একজন যাত্রী পথিমধ্যে বাকেরগঞ্জ কিংবা যেকোন গন্তব্যে নামলে তার কাছ থেকে পুরো পথের ভাড়া আদায় করা হয়। এটা চরম অন্যায় বলে তিনি অভিযোগ করেন।
নীলা আহম্মেদ নামে এক ভুক্তভোগী নারী যাত্রীর অভিযোগ, বাড়তি ভাড়া না দিলে বাস ভর্তি যাত্রীর সামনে তাদের নানা ধরনের কটুক্তি করে সম্মানহানী করা হয়।
যাত্রীরা জানান, ৪৫ সিটের বাসে যাত্রী নেয়া হয় দ্বিগুনের বেশি। দাঁড়ানো যাত্রীর কারণে বাসে তীল ধারনের ঠাই থাকে না। যাত্রীদের সাথে এভাবে জুলুম করা হলেও দেখার কেউ নেই। তাদের অভিযোগ বাস মালিক কর্তৃপক্ষের তদারকি না থাকায় শ্রমিক-কর্মচারীদের জলুমের মাত্রা দিন দিন বেড়েই চলছে। এর অবসান হওয়া দরকার বলে তারা মনে করেন।
অভিযোগ অস্বীকার করে বরিশাল-পটুয়াখালী মিনি বাস মালিক সমিতির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি নজরুল ইসলাম খোকন বলেন, বরিশাল থেকে ৩ টি মালিক সমিতির সমন্বিত বাস চলাচল করে। তাদের প্রত্যেকটি রুটের কাউন্টারে ভাড়ার নির্ধারিত তালিকা টাঙানো রয়েছে। এর বেশি ভাড়া আদায়ের কোন বিধান নেই। আবার পথিমধ্যে কোন যাত্রী নেমে গেলে তার কাছ থেকে পুরো পথের ভাড়া আদায় করাও বেআইনী। নিয়ম-নীতি বাস্তবায়নে বাস মালিক সমিতির একাধিক দল সব কিছু তদারকি করছে। এরপরও কোন অসাধু শ্রমিক-কর্মচারী কোন ফন্দি এটে যাত্রীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়, পথিমধ্যে নেমে যাওয়া যাত্রীর কাছ থেকে পুরো পথের ভাড়া আদায় কিংবা কোন যাত্রীর সাথে দুর্ব্যবহারের লিখিত অভিযোগ পেলে ওই শ্রমিক-কর্মচারী সহ সংশ্লিস্ট বাসটি রুটে সাময়িক সাসপেন্ড করে দেওয়ার কথা বলেন বাস মালিক সমিতির সভাপতি খোকন।
বরিশালের জেলা প্রশাসক মো. হাবিবুর রহমান বলেন, অভ্যন্তরীণ রুটের বাসে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের বিষয়টি তিনি শুনেছেন। তিনি এ বিষয়ে খোঁজখবর নিয়ে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় বন্ধে যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা নেবেন বলে জানিয়েছেন।
বিডি প্রতিদিন/এ মজুমদার