নাটোর শহরের দক্ষিণ পটুয়াপাড়া এলাকায় জবেদা বেওয়া (৭০) নামে এক বৃদ্ধা মা'কে উদ্ধার করা হয়েছে। খবর পেয়ে সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার জেসমিন আক্তার বানু ওই বৃদ্ধাকে উদ্ধার করেছেন।
বুধবার রাত ৮টার সময় ওই ঘরের তালা ভেঙে বৃদ্ধা জবেদাকে বের করার পর রাতের খাবার খাওয়ানো হয়। জানা যায়, মঙ্গলবার সকালে জবেদাকে তার নিজ ছেলে মাহবুব হোসেন তাকে তার নিজ বাড়ির একটি ছোট্ট ঘরে তালাবদ্ধ অবস্থায় আটকে রেখে বাহিরে চলে যান। ফলে দীর্ঘ সময় অনাহারে থাকেন তার মা।
জবেদা বেওয়া শহরের দক্ষিণ পটুয়াপাড়া এলাকার মরহুম মোজাহার আলী তালুকদারের স্ত্রী এবং অভিযুক্ত মাহবুব হোসেন তারই সন্তান।
নাটোর সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার জেসমিন আক্তার বানু জানান, গত ৫ সেপ্টেম্বর সকালে ছেলে মাহবুব হোসেন তার বৃদ্ধ মাকে তার বাড়িতে ছোট্ট একটি ঘরে তালাবদ্ধ অবস্থায় রেখে বাহিরে চলে যান। এরপর আর বাড়ি ফিরে আসেনি মাহবুব হোসেন। পরে মা জোবেদা বেওয়া ক্ষুধার জ্বালা সইতে না পেরে কান্নাকাটি ও চিৎকার করতে থাকেন। এসময় স্থানীয় লোকজন টের পেয়ে ঘটনাটি জেলা প্রশাসককে অবহিত করে। পরে জেলা প্রশাসক শাহিনা খাতুনের নির্দেশে বুধবার রাত ৮টার দিকে উপজেলা নির্বাহী অফিসার জেসমিন আক্তার বানু পুলিশসহ ঘটনাস্থল গিয়ে ঘরের তালা ভেঙ্গে বৃদ্ধাকে উদ্ধার করেন এবং রাতের খাবার খাওয়ান হয়।
এঘটনায় জেলা প্রশাসক তাৎক্ষণিকভাবে বৃদ্ধার ছেলে মাহবুব হোসেনকে পিতা-মাতার ভরণ পোষণ আইন অনুযায়ী তার মায়ের দায়িত্ব নেওয়ার জন্য একটি চিঠি দেন। ওই চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, একজন সক্ষম ও সামর্থবান সন্তান হওয়া সত্ত্বেও মাহবুব হোসেন মায়ের সাথে যে অশোভন ও আমানবিক আচরণ করেছেন, তা পিতা-মাতা ভোরণ পোষণ আইন ২০১৩ এর ৩ ধারা মোতাবেক শাস্তিযোগ্য অপরাধ। তাই বুধবার দিবাগত রাত থেকে মাহবুব হোসেনকে তার বৃদ্ধ মাতাকে মৃত্যুর আগ মুহূর্ত পর্যন্ত খাদ্য, বস্ত্র, চিকিৎসা ও নিরাপদ আবাসনসহ সকল সহযোগিতা প্রদান করতে হবে। অন্যথায় ওরসজাত সন্তান হিসাবে তার ছেলের বিরুদ্ধে পিতা-মাতা ভোরণ পোষণ আইন ২০১৩ এর ৩ ধারা লংঘনের অপরাধে একই আইনের ৪ ধারা মোতাবেক আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
জেলা প্রশাসক শাহিনা খাতুন এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এ ব্যাপারে সমাজের সকলকে সতর্ক থাকার অনুরোধও জানিয়েছেন তিনি।
বিডি-প্রতিদিন/০৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৭/মাহবুব