নাটোরে অপহরণের ২৩ দিন পার হলেও নবম শ্রেণির সেই স্কুলছাত্রীকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। এদিকে অপহরণকারী বন্ধনের সন্ধানে এক লাখ টাকা পুরস্কার ঘোষণা করেছে ওই স্কুলছাত্রীর পরিবার। অন্যদিকে একমাত্র মেয়ের কোন সন্ধান না পেরে শয্যাশায়ী হয়েছেন মা।
জানা যায়, অপহৃত স্কুলছাত্রী নাটোর সরকারী উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী। এ ঘটনায় গত ১৬ আগস্ট ছাত্রীর বাবা মামুনুল হক বাদী হয়ে নাটোর থানায় একটি মামলা করেন। মামলা সূত্রে জানা যায়, নাটোর সদর উপজেলার ছাতনী ইউনিয়নের ভাটপাড়া গ্রামের মেহেদী হাসান বকুলের মাদকাসক্ত ছেলে বন্ধন ইসলাম নামের এক তরুণ প্রায়ই স্কুল যাওয়া-আসার পথে ওই ছাত্রীকে উত্ত্যক্ত করত।
ছাত্রীর বাবা মেয়েকে উত্ত্যক্ত করার প্রতিবাদ জানালে গত ১ আগস্ট মেয়েটিকে রাস্তা থেকে তুলে নিয়ে যায় বন্ধন। এসময় তার সাথে আরও কয়েকজন ছিল। এরপর আতঙ্কগ্রস্ত মেয়ের বাবা সম্মানের কথা ভেবে বিষয়টি মীমাংসা করেন। মুচলেকা দিয়ে বন্ধনের বাবা ছেলেকে থানা থেকে ছাড়িয়ে নিয়ে যায়। গত ১৫ আগষ্ট স্কুলছাত্রী শোক দিবসের অনুষ্ঠান শেষে বাসায় ফেরার পথে বখাটে বন্ধন তার কয়েকজন বন্ধুকে নিয়ে তাকে ফের অপহরণ করে নিয়ে যায়।
অপহৃত স্কুলছাত্রীর বাবা মেয়ের অপহরণের খবর পেয়ে বন্ধনের বাসায় গিয়ে জানতে পারে অপহরণকারী বন্ধন ও তার বাবা বকুল এবং মা কুহেলী ইসলাম একই সাথে মাইক্রোবাসে উঠে পালিয়েছে। মেয়েকে উদ্ধারের জন্য অপহরণকারীর আত্মীয়স্বজন ও পরিবারের সদসদের কাছে ধর্ণা দিলেও তারা কেউ সাড়া দেয়নি। ফলে অপহরণের ১ দিনের মাথায় গত ১৬ আগস্ট বন্ধনসহ সাত জনের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের (সংশোধন/০৩)এর ৭/৩০ ধারায় মামলা (মামলা নং – ৩৬/৪৮) দায়ের করেন ছাত্রীটির বাবা।
মামলায় অন্য আসামিরা হলো- বন্ধনের বাবা মেহেদী হাসান বকুল, মা কুহেলী বেগম, বন্ধু আব্দুর রহিম, চাচা মোঃ হাবু, মামা সাইফুল ইসলাম রোজার্স ও লোটাস। মামলা দায়েরের পর বন্ধনের চাচা মোঃ হাবুকে পুলিশ গ্রেফতার করে। তারপর থেকে পুলিশ অভিযান অব্যাহত আছে বলে দাবী করলেও মামলার কোন অগ্রগতি নেই।
এ ব্যাপারে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই আলী আকবর বলেন, অপহরণকারীর ব্যবহার করা মোবাইল ফোনের কল-লিস্ট ঢাকায় হেড অফিসে পাঠানো হয়েছে। আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত আছে।
বিডি প্রতিদিন/৮ সেপ্টেম্বর ২০১৭/হিমেল