বগুড়ার ধুনটে টেংরাখালি সরকারি জলমহলের অবৈধ ইজারা বাতিল ও পেঁচিবাড়ি মালোপাড়া ধীবর মৎস্যজীবী সমবায় সমিতির নিবন্ধন বাতিল এবং সংখ্যালঘু জেলে পরিবারের নিরাপত্তার দাবিতে মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়েছে।
শনিবার দুপুরে চৌকিবাড়ী ইউনিয়নের টেংরাখালি জলমহলের তীরে শতাধিক জেলে পরিবারের নারী-পুরুষ ওই মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন।
মানববন্ধন কর্মসূচিতে টেংরাখালি মৎস্যজীবী সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক বলরাম হাওয়ালদার বলেন, আমরা পেশায় নিবন্ধিত শতাধিক জেলে পরিবার মৎস্য আহরণ করে জীবিকা নির্বাহ করি। টেংরাখালি জলমহলটি আমাদের জীবিকার আশ্রয়ের একমাত্র কেন্দ্র। কিন্তু জলমহলটি নিয়ে একটি প্রভাবশালী মহল ৮/১০ বছর যাবত অবৈধভাবে ভোগ দখল করছে এবং আমাদের জেলেদের ওপর নানা রকম নির্যাতন করছে।
একই এলাকার মিরকিখালি মৎস্যজীবী সমবায় সমিতির সভাপতি বিশ্বনাথ হাওয়ালদার বলেন, জলমহল হইতে ৫/৬ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত পেঁচিবাড়ী মালোপাড়া ধীবর মৎস্যজীবী সমবায় সমিতির নামে গত বছরের ১২ই এপ্রিল ভূমি মন্ত্রণালয়ের জল মহল ইজারা কমিটির নিকট থেকে অবৈধভাবে টেংরাখালি জলমহলটি ৬ বছর মেয়াদী উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় ইজারা নেয়। কিন্তু ওই সমিতির সভাপতি শুভাষ চন্দ্র বিশ্বাস সরকারি জলমহলের নীতিমালা উপেক্ষা করে এলাকার প্রভাবশালী গুয়াগাছি গ্রামের মৃত বাদুলী খানের ছেলে আব্দুর রউফ খানের নামে সাব ইজারা দেয়। আব্দুর রউফ সাব ইজারা নিয়ে জলমহলের আশপাশের পাঁচথুপি, কৈয়গাতি, রুদ্রবাড়ীয়া, তেলিগাঁতি, নাগেশ্বরগাঁতি ও গুয়াগাছি সহ বিভিন্ন গ্রামের কিছু প্রভাবশালীদের সাথে নিয়ে জলমহল ভোগ দখলের চেষ্টা করে। এবিষয়ে টেংরাখালি মৎস্যজীবি সমিতির পক্ষে বলোরাম হাওয়ালদার বাদী হয়ে উচ্চ আদালতে মিরকিখালি মৎস্যজীবী সমিতির পক্ষে বিশ্বনাথ হাওয়ালদার রিটপিটিশন মামলা দায়ের করা হয়। উচ্চ আদালতের বিচারক পৃথক মামলা দুটি স্থগিতাদেশ দিয়ে রুল জারি করেন।
বলোরাম হাওয়ালদার আরও জানান, আদালতের স্থগিতাদেশ পাওয়ার পর গত এক বছর ধরে ওই জলমহল থেকে মাছ ধরা বন্ধ হয়ে যায়। এতে আব্দুর রউফ খানের বাহিনীর সদস্যরা টেংরাখালি গ্রামের জেলে পরিবারের ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। তারা মামলা তুলে নেওয়ার জন্য আমাদের বিভিন্নভাবে ভয়ভীতি দেখায়। এতে আমরা রাজি না হওয়ায় গত ৪ই জুন তারা আমাদের ওপর হামলা চালিয়ে নেপাল চন্দ্র হাওয়ালদার, জগন্নাথ হাওয়ালদারসহ ৪/৫ জনকে কুপিয়ে জখম করে। এ ঘটনায় আমরা ওই সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে থানায় মামলা দায়ের করি। কিন্তু বর্তমানে আসামিরা জামিনে মুক্ত হয়ে এসে আরও ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেছে এবং প্রাণনাশসহ আমাদের গ্রাম থেকে উচ্ছেদের জন্য পায়তারা করছে। তাই এ বিষয়ে আমরা সংখ্যালঘু মৎস্যজীবী সম্প্রদায়ের সদস্যরা প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
বিডি প্রতিদিন/এনায়েত করিম