কক্সবাজারের চকরিয়ার মাতামুহুরী নদীতে গোসল করতে নেমে চোরাবালিতে আটকে পানিতে ডুবে মারা যাওয়া পাঁচ স্কুলছাত্রের মধ্যে চারজনের দাফন সম্পন্ন হয়েছে। রবিবার সকাল ১১টায় মাতামুহুরী ব্রিজের নিচে জেগে উঠা চরে ঘটনাস্থলের পাশেই তাদের নামাজের জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এসময় উপজেলার হাজার হাজার শোকার্ত মানুষ জানাজায় অংশ নেন। পরে তাদের মরদেহ নিজ নিজ এলাকার সামাজিক কবরস্থানে দাফন করা হয়। এদিকে অপর ছাত্র তূর্ণ ভট্টাচার্যের লাশ সৎকারের জন্য নিজ এলাকা চট্টগ্রামের পটিয়ায় নিয়ে যাওয়া হয়।
সরজমিন ঘুরে দেখা গেছে, সকাল ১০টা থেকে দলে দলে শোকার্ত মানুষ জানাজায় অংশ নিতে মাতামুহুরীর চরে জড়ো হতে থাকে। পরে সকাল সাড়ে ১০টার দিকে এক এক করে চারটি মরদেহ মাতামুহুরীর চরে এ্যাম্বুলেন্সে করে নিয়ে আসা হয়। এসময় শতশত মানুষ মরদেহ দেখে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। পরে সকাল ১১টায় চিরিংগা বাস স্টেশন জামে মসজিদের খতিব মাওলানা কফিল উদ্দিনের ইমামতির মাধ্যমে নামাজে জানাজা অনুষ্টিত হয়।
জানাজায় অংশ নেয়া কয়েকজন ব্যক্তি জানায়, যে মাতামুহুরী তাদের প্রাণ কেড়ে নিলো সেই মাতামুহুরীর চরেই তাদের বিদায়ে এক হৃদয়বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হয় পুরো চর জুড়ে। এটা একটা বিরল ঘটনা।
জানাজায় চকরিয়া-পেকুয়া আসনের সংসদ সদস্য আলহাজ্ব মো. ইলিয়াছ, চকরিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান আলহাজ্ব জাফর আলম, চকরিয়া উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ও ইউপি চেয়ারম্যান গিয়াস উদ্দিন চৌধুরী, চকরিয়া পৌরসভার মেয়র মো.আলমগীর চৌধুরী, সাবেক মেয়র আলহাজ্ব নুরুল ইসলাম হায়দার, উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) খোন্দকার ইখতিয়ার উদ্দিন মো.আরাফাত, চকরিয়া থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো.ইয়াসির আরাফাত, চকরিয়া পৌরসভার কাউন্সিলর মো.রেজাউল করিম, মুজিবুল হক ও বিভিন্ন স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ উপজেলার হাজার হাজার শোকার্ত মানুষ অংশ নেন।
উল্লেখ্য, গতকাল শনিবার বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে মাতামুহুরীর জেগে উঠা চরে ফুটবল খেলা শেষে নদীতে গোসল করতে নামে চকরিয়া গ্রামার স্কুলের সাঈদ জাওয়াদ অরভি (১৫), দুই ভাই আমিরুল হোসেন এমশাদ (১৫) ও ৮ শ্রেণী পড়ুয়া আফতাব হোসেন মেহরাব (১২) , ১০ শ্রেণী পড়ুয়া তূর্ণ ভট্টাচার্য্য ও একই শ্রেণীর ফারহান বিন শওকত (১৫)। এসময় চোরাবালিতে আটকে পাঁচ ছাত্র নিখোঁজ হয়। এখবর পেয়ে স্থানীয় প্রশাসন, ফায়ার সার্ভিস ও স্থানীয় লোকজন উদ্ধারে অভিযান শুরু করে। পরে জেলেরা জাল ফেলে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে তিনজনের মরদেহ উদ্ধার করে। পরে চট্টগ্রাম থেকে তিনজনের ডুবুরী দল এসে রাতে সাড়ে ১১টা ও রাত ১২টায় আরো দুটি মরদেহ উদ্ধার করে।
বিডি প্রতিদিন/১৫ জুলাই ২০১৮/হিমেল