নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলায় বড়দের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব, লোভ, প্রতিহিংসা, পরকীয়া, আর লালসার বলি হচ্ছে কোমলমতি শিশু, যুবক-যুবতী ও গৃহবধূরা। পর পর তিন শিশুসহ কিশোর-কিশোরীদের কয়েকটি হত্যার ঘটনায় আতংকিত হয়ে নিরাপত্তাহীনতায় দিন কাটাচ্ছেন অভিভাবকসহ এলাকাবাসী।
জানা যায়, গত এক বছরে গুরুদাসপুরে তিনটি শিশু, যুবক-যুবতী, গৃহবধূসহ ১৩টি হত্যাকাণ্ডের মামলা রেকর্ড করা হয়েছে। এতে প্রশাসনও নড়েচড়ে বসেছে। পুলিশ বলছে শিশু ও যুবক-যুবতী, গৃহবধূ হত্যার ঘটনা সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে দোষীদের আইনের আওতায় আনা হচ্ছে। হত্যা রোধে নেয়া হয়েছে নানা প্রদক্ষেপ।
গত বছরের ২০ ডিসেম্বর গুরুদাসপুর উপজেলার বিলশা দাখিল মাদ্রাসার ২য় শ্রেণীর ছাত্রী খাদিজা খাতুন বাড়ির পাশে খেলতে গিয়ে নিখোঁজ হয়। এ ঘটনায় পরদিন শিশুটির চাচা মোর্শেদ আলী থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন। এরই প্রেক্ষিতে পুলিশ তল্লাশি করে খাদিজার কোনো সন্ধান পায়নি। পরে নিখোঁজের দুই দিন পর বাড়ির পাশের পুকুরে বস্তাবন্দি খাদিজার মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। ধারণা করা হয় ধর্ষণের পর খাদিজাকে হত্যা করা হয়েছে।
এর আগে গত বছরের ১১ সেপ্টেম্বর উপজেলার জুমাইনগর মোল্লাবাজার এলাকায় মমতাজ উদ্দিনের দেড় বছরের শিশু আহম্মদ আলী নিখোঁজ হয়। এর দুই দিন পর তাদের বাড়ি থেকে তিনশ গজ দুরে ডোবা থেকে শিশুটির লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এরপর নিহত শিশুর বাবা বাদি হয়ে চার প্রতিবেশী লিপি খাতুন, মকুল, মজিবর ও কোহিনুরকে আসামি করে আদালতে হত্যা মামলা দায়ের করলে পুলিশ চারজনকে আটক করে।
গত বছরের ৫ মে উপজেলার চাঁচকৈড় বাজারপাড়ার মোহন কুমার ঘোষের শিশু কন্যা দৃষ্টি ঘোষ নিজ বাড়ির সামনে খেলাধূলার সময় হারিয়ে যায়। নিখোঁজের পরদিন প্রতিবেশী প্রদীপ সরকারের বাড়ি থেকে শিশুটির বস্তাবন্দি মৃতদেহ উদ্ধার করে। পুলিশের অনুসন্ধানে বেরিয়ে আসে শিশুটিকে ধর্ষণের পর শ্বাসরোধে হত্যা করে তাকে বস্তাবন্দি করে একটি ট্রাংকের মধ্যে রাখা হয়েছিল।
গুরুদাসপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ সেলিম রেজা জানান, শিশু হত্যাসহ সকল হত্যাকাণ্ডের ঘটনাগুলো অধিক গুরুত্বের সাথে মনিটরিং করে দোষীদের আইনের আওতায় আনাসহ শাস্তি নিশ্চিতের জোর প্রচেষ্টা অব্যাহত আছে। ইতিমধ্যে শিশু হত্যা প্রতিরোধে ও মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে কার্যকরি পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে।
বিডি প্রতিদিন/১৫ জুলাই ২০১৮/হিমেল