পাওনা টাকা না দেওয়ায় নারায়গঞ্জ শহরের টানবাজার এলাকায় আরিফ নামে এক হোসিয়ারি শ্রমিককে ছুরিকাঘাতে হত্যার অভিযোগ উঠেছে তারই এক সহকর্মীর বিরুদ্ধে।
বৃহস্পতিবার রাত সোয়া ১২টার দিকে টানবাজার এলাকায় শীতলক্ষ্যা নদীর তীরে ওয়াকওয়েতে এ হত্যাকাণ্ড ঘটে। এ ঘটনায় জড়িত অভিযোগে পুলিশ মিরাজ নামে আরিফের এক সহকর্মীকে আটক করেছে।
নিহত আরিফ শহরের নিতাইগঞ্জ ঋষিপাড়া এলাকায় ভাড়াটে বাসিন্দা মাটি কাটার শ্রমিক আব্দুল মতিনের ছেলে। দুই ভাই ও তিন বোনের মধ্যে আরিফ চতুর্থ। সে টানবাজার এলাকায় রিভারভিউ টাওয়ারের নবম তলায় নতুন চালু হওয়া একটি হোসিয়ারির শ্রমিক।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, সহকর্মী সোহরাবের কাছ থেকে কিছুদিন আগে মাত্র ৭শ’ টাকা ধার নিয়েছিল আরিফ। সেই টাকা ফেরত না দেওয়ায় আরিফকে খুনের পরিকল্পনা করে সোহরাব। পরিকল্পনা মোতাবেক বৃহস্পতিবার রাতে হোসিয়ারিতে কাজ শেষে বাড়ি ফেরার পথে কয়েকজনকে সঙ্গে নিয়ে আরিফকে ওয়াকওয়েতে ডেকে নিয়ে যায় সোহরাব।
এক পর্যায়ে আরিফের উপর অতর্কিত হামলা চালায় সোহরাব ও তার সহযোগিরা। এরপর আরিফের বুকেসহ শরীরের কয়েক জায়গায় ছুরিকাঘাত করে সেখান থেকে পালিয়ে যায় তারা।
এসময় আরিফের ডাক চিৎকারে আশপাশের লোকজন এসে গুরুতর অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে শহরের খানপুরে ৩শ' শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
এদিকে, ঘটনাস্থলে উপস্থিত লোকজন মিরাজ নামে আরিফের এক সহকর্মী যুবককে গণপিটুনি দিয়ে আটকে রাখে। খবর পেয়ে সদর মডেল থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে হত্যায় জড়িত অভিযোগে মিরাজকে আটক করে। পরে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সদরের জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠায় পুলিশ।
থানা পুলিশের কাছ থেকে খবর পেয়ে নিহত আরিফের মা ও বড় ভাইসহ নিকট স্বজনরা রাত দুইটার দিকে সদর থানায় ছুটে আসেন এবং কান্নায় ভেঙে পড়েন।
আরিফের বড় ভাই দেলোয়ার হোসেন সেতু জানায়, আরিফের কাছ থেকে কেউ টাকা পেতো সেটা আমরা কেউ জানতাম না। স্বজনরা এ হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের দ্রুত গ্রেফতারসহ দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।
এ ব্যাপারে সদর মডেল থানার পরিদর্শক তদন্ত গোলাম মোস্তফা জানান, হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ছুরি জব্দ করা হয়েছে। আটক মিরাজকে জিজ্ঞাসাবাদ করে হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের শনাক্ত করার চেষ্টা করা হচ্ছে। একই সঙ্গে অভিযুক্ত সোহরাবসহ অন্যান্যদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে।
সদর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মো: আসাদুজ্জামান জানান, এ ঘটনায় তদন্ত চলছে। নিহতের স্বজনদের পক্ষ থেকে দুইজনের নাম উল্লেখ করে মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
বিডি প্রতিদিন/কালাম