পিরোজপুরের ভান্ডারিয়ায় এক বখাটের প্রতিনিয়ত উৎপাত ও ফেসবুকে ছবি ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকিতে আত্মহত্যা করেছে দশম শ্রেণির এক শিক্ষার্থী।
নিহত রুকাইয়া রুপা (১৫) উপজেলার ভান্ডারিয়া বন্দর সরকারি বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয় এবং ভান্ডারিয়া শহরের হোটেল ব্যবসায়ী রুহুল মুন্সির মেয়ে। নিহত রুপা ৪ ভাই বোনের মধ্যে দ্বিতীয়।
পরিবার সূত্রে জানা যায়, বিগত কয়েক মাস ধরে বিদ্যালয়ে যাওয়া-আসার পথে রুপাকে উত্যক্ত করত ভান্ডারিয়া গ্রামের মঞ্জু খানের ছেলে তামিম খান (১৯)। এক পর্যায়ে রুপার একটি ছবি এডিট করে তা বিভিন্ন জনের মেসেঞ্জারে পাঠিয়ে দেয় তামিম। শুক্রবার বিকালে এক সহপাঠীর সঙ্গে প্রাইভেট শেষে বাসায় ফেরার পথে পুনরায় পথ আটকে রুপাকে বিরক্ত করতে থাকে তামিম এবং তার সঙ্গে প্রেম না করলে এডিট করা ছবিটি ফেসবুকে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেয়। এরপর বাড়িতে ফিরে রুপা বিষয়টি তার মাকে জানায়। তার মা বিষয়টি তাৎক্ষণিকভাবে রুপার বাবাকে জানালে রাতে বাড়ি ফিরে রুপার বাবা এ বিষয়ে কথা বলবেন বলে জানান।
ওই দিন রাত ১০টায় বাড়ি ফিরে রুপার বাবা তার মেয়েকে ডেকে পাঠালে ভেতর থেকে দরজা বন্ধ পান। অনেক ডাকাডাকির পরও তার কোনও সাড়া না পেয়ে ঘরের দড়জা ভেঙে ফেলেন। এ সময় ঘরের মধ্যে রুপাকে অচেতন অবস্থায় পান। রুপা ঘরে থাকা ঘুমের ওষুধসহ বিভিন্ন ধরনের ওষুধ খেয়ে অচেতন হয়ে পড়ে বলে ধারণা করা হয়। তাকে তাৎক্ষণিকভাবে ভান্ডারিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে সেখানে তার কোনও চিকিৎসা না করে ডাক্তাররা বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়ে দেন। রাত আড়াইটার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
এদিকে রাতেই বিষয়টি পুলিশকে জানানো হলেও তারা অভিযুক্ত তামিমকে আটক করতে পারেনি।
রুপাকে উত্যক্তকারী তামিমের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়ে শনিবার মানববন্ধন করেছে করেছে ভান্ডারিয়া বন্দর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
এ বিষয়ে ভান্ডারিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাকসুদুর রহমান জানান, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বিডি প্রতিদিন/কালাম