২১ নভেম্বর, ২০১৯ ১৫:১৭

বড়লেখায় বানরের ফাঁসি কার্যকর!

মৌলভীবাজার প্রতিনিধি

বড়লেখায় বানরের ফাঁসি কার্যকর!

মৌলভীবাজারের বড়লেখায় লোকালয়ে তাণ্ডব চালিয়ে এক শিশুকে হত্যা ও ৩০ জনকে আহত করে একটি বানর। পরে সেই বানরকেও মেরে ফেলেছে এলাকাবাসী।

মঙ্গলবার সকালে ঘুমের ওষুধ মিশানো ভাত খাইয়ে দিনব্যাপী ধাওয়া করে বিকালে বানরকে ধরার পর উত্তেজিত জনতা আদালত বসিয়ে তার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করে।

অভিযোগ রয়েছে, বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ বিভাগের কর্মকর্তাদের স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান বানরের হামলার বিষয়টি জানানোর পরও রেঞ্জ কর্মকর্তা বিষয়টি গুরুত্ব দেননি।

জানা গেছে, বড়লেখা উপজেলার পাথারিয়া পাহাড়ের দলছুট একটি বন্য বানর প্রায় এক মাস আগে উপজেলার কাঠালতলী এলাকায় লোকালয়ে প্রবেশ করে। বানরটি কাঠালতলী, রুকনপুর, বড়খলা, দক্ষিণ মুছেগুল, উত্তরভাগসহ আশপাশের গ্রামগুলোতে বিভিন্ন সময় নানা তাণ্ডব চালায়। সুযোগ বুঝে সে নিরীহ পথচারীসহ শিশু শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালাতে থাকে। ওই বন্য বানরের হামলায় শিকার হন বড়খলা গ্রামের এক শিশু, শিক্ষার্থী, মহিলাসহ অন্তত ৩০ জন।

বানরের হামলায় শিকার সবাইকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে হয়েছে। এখনো কয়েকজন গুরুতর অবস্থায় ওসমানী মেডিকেলে চিকিৎসাধীন নিচ্ছেন। বানরের উপদ্রপে অতিষ্ট লোকজন স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের শরণাপণ্ন হলে তিনি বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ বিভাগের রেঞ্জ কর্মকর্তাদের খবর দেন। ১০ দিন পূর্বে রেঞ্জ কর্মকর্তা ঘটনাস্থলগুলো পরিদর্শন করে বনাঞ্চলে প্রত্যাবর্তনের কোন ব্যবস্থা না নেয়াতে বন্য বানরের আক্রমণে অতিষ্ট হয়ে ওঠে গ্রামবাসী।

এরপর থেকেই সেই বানরটিকে মেরে ফেলার জন্য ৬-৭ গ্রামের বাসিন্দারা ধাওয়া শুরু করেন। অবশেষে গত মঙ্গলবার সকালে ভাতের সঙ্গে অতিমাত্রায় ঘুমের ওষুধ খাইয়ে নেশাগ্রস্ত করে বানরটিকে আওত্ত্বে আনেন। উত্তেজিত জনতা বিকাল ৩টার দিকে একটি ধান ক্ষেতের চতুর্দিক ঘেরাও দিয়ে লাটিসোঠার আঘাতে অর্ধমৃত অবস্থায় আটক করে পরবর্তীতে উত্তেজিত জনতা বন্য বানরটির ফাঁসি কার্যকর করে।

স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান এনাম উদ্দিন বলেন, প্রায় একমাস ধরে ৬-৭ গ্রামের লোকজন ওই বন্য বানরের আক্রমনে আতঙ্কিত ছিলেন। বানরটির হামলায় এক শিশুসহ আহত হয়েছেন আরও ৩০ জন। বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ বিভাগে খবর দিলে রেঞ্জ কর্মকর্তারা কয়েকদিন আগে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। কিন্তু লোকালয় থেকে তাড়ানোর তেমন কোন উদ্যোগ নেননি। 

এনাম উদ্দিন আরও বলেন, বানরটির আক্রমণের বিষয়টি তিনি উপজেলার আইন শৃঙ্খলা সভায়ও উপস্থাপন করেন। কিন্তু বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ বিভাগ থেকে  তেমন গুরুত্ব দেয়া হয়নি।

বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ বিভাগের গাফিলতির কারণে আজকের এই পরিস্থিতি। বানরের আক্রমণে অতিষ্ট হয়ে ৬-৭ গ্রামের লোকজন এক হয়ে বানরটিকে মেরে ফেলে।

বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ বিভাগের রেঞ্জ কর্মকর্তা জুলহাজ উদ্দীন জানান, বানরের উপদ্রপের খবর পেয়েছি। বন্যবানরটির প্রত্যাবর্তনের কোন উদ্যোগ নিয়েছিলেন কি এমন প্রশ্নে উনি নিরব থাকেন।

বিডি প্রতিদিন/সিফাত আব্দুল্লাহ/আরাফাত

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর