হিমালয়ের পাদদেশের জেলা দিনাজপুরে জেকে বসেছে শীত। ক্রমাগতভাবে কমছে দিন-রাতের তাপমাত্রা। তাপমাত্রা দিনে কিছুটা কম থাকলেও বিকালের পর থেকে শুরু হয় কনকনে ঠাণ্ডা। শীতের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে জনদুর্ভোগও। হিমেল হাওয়ায় তীব্র ঠাণ্ডার কারণে খেটে খাওয়া মানুষ পড়েছে চরম দুশ্চিন্তায়। পৌষের দিন যত গড়াচ্ছে ততই তীব্র হচ্ছে শীত। শুক্রবার সকাল থেকে বিভিন্ন এলাকায় দিনের বেশিরভাগ সময় ঘন কুয়াশার চাদরে মোড়া ছিল। জেলায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৯.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
শ্রমিকের হাট হিসেবে পরিচিত দিনাজপুর শহরের ষষ্টিতলা মোড়। এখানে বিভিন্ন কাজের শ্রমিক দিন হাজিরা ভিত্তিতে পাওয়া যায়। ঘরোয়ালী কাজ করা ৬০ বছরের বয়সের শফিউল ইসলাম নামে এক শ্রমিক জানান, কি করিম বাহে। হামরা সারা দিন মানুষের ঠেনা (কাছে) কাজ করি, আর রাইতত (রাতে) বাজার করিয়া বাড়ি লই (নিয়ে) যাই। কিন্তু ঠাণ্ডার ঠেনা (কারণে) কোথাও ঠিক মতন কাজ করিবার পারছু (পারছি) না। এই থেনা (এইখানে) বয়স্ক লোক দেখিলে কেউ কাজে নেবার চাহে না। আইজকা কোন ঠেনা (কোথাও) কাজ না পাইলে মোর (আমার) পরিবার কীভাবে চলিবে?
দিনাজপুর সদর, হাকিমপুর ছাড়াও বিভিন্ন উপজেলায় ঘন কুয়াশা আর উত্তরের হিমেল হাওয়ায় নাকাল হয়ে পড়েছে দিনমজুর ও চাষিরা। ঠাণ্ডাজনিত রোগের প্রকোপে শ্বাসকষ্টসহ ডায়রিয়ায় ভুগছে শিশু ও বৃদ্ধরা। তীব্র শীতের কারণে বোরো বীজতলা ক্লোড ইনজুরির আশঙ্কা করছেন কৃষকরা। স্থবির হয়ে পড়েছে জনজীবন।
হতদরিদ্র, ছিন্নমূল ও নিম্ন আয়ের মানুষ শীতবস্ত্রের অভাবে খড়-কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করলেও গৃহপালিত পশুদের অবস্থা নাজুক। ঘন কুয়াশায় দুর্ঘটনা এড়াতে দিনের বেলাতেও রাস্তায় হেড লাইট জ্বালিয়ে চলাচল করছে যানবাহন।
আবহাওয়া অফিসের কর্মকর্তা তোফাজ্জল হোসেন জানান, শুক্রবার দিনাজপুরে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ৯.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। উত্তরের হিমেল হাওয়ার কারণে কনকনে ঠাণ্ডা লাগছে। আরও শৈত্যপ্রবাহের পূর্বাভাস রয়েছে।
বিডি প্রতিদিন/ফারজানা