২৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২০ ১৭:২৯

নাটোরে নতুন জাতের বোরো চাষ

নাটোর প্রতিনিধি

নাটোরে নতুন জাতের বোরো চাষ

নাটোরে কয়েক বছর বোরো ধানের ভাল দাম না পেলেও নতুন করে আশায় বুক বেঁধে বোরো চাষে মেতে উঠেছেন কৃষক। কৃষক ব্যস্ত এখন বোরো চারা রোপন ও পরিচর্যার কাজে। একইসঙ্গে নতুন জাতের ধান আবাদে উৎসাহিত হয়ে উঠেছেন কৃষক। বালাইমুক্ত, উৎপাদনে সময় কম, খরচ সাশ্রয় এবং ভাল ফলনের আশা নিয়ে নতুন জাতের বোরো ধান আবাদের জন্য জমি প্রস্তুত ও রোপণে ব্যস্ত সময় পার করছেন তারা। কৃষি বিভাগের পরামর্শ ও প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় কৃষকরা ইতিমধ্যে নতুন জাতের বীজ (ব্রি- ধান-৮১, ৮২, ৮৪ ও ৫৮ জাতের) রোপণ শুরু করেছেন।

আবহাওয়া ভাল থাকলে এবং পরিবেশ অনুক‚লে থাকলে অন্যান্য জাতের তুলনায় একটু আগেই ফসল ঘরে তুলতে পারবেন এমন আশা করছেন চলনবিল ও হালতিবিলের কৃষকরা। আর কৃষি বিভাগের দাবি, এসব নতুন জাতের বোরো ধানের উৎপাদন আশানুরূপ হওয়ায় নতুন জাতের বীজের উৎপাদনও বৃদ্ধি পাবে। এতে কৃষক ভাল ও গুণগত মানের বীজ সহজেই পেয়ে যাবেন। তাদের কারো জন্য অপেক্ষা বা ধর্না দিতে হবে না।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্র জানায়, চলতি ২০১৯-২০ বোরো মৌসুমে ২ লাখ ১৮ হাজার ৫৭০ মেট্রিক টন খাদ্যশস্য উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে ৫৬ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো ধান রোপণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে কৃষি বিভাগ।

এ পর্যন্ত জেলার সাতটি উপজেলায় প্রায় ৯৪ ভাগ জমিতে বোরো ধান রোপণ স¤পন্ন হয়েছে। তবে এবার লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাওয়ার আশা করছে কৃষি বিভাগ। গত বছর ৬১ হাজার ২০০ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ হয়েছিল। তাতে ধান উৎপাদন হয়েছিল ২ লাখ ৮৮ হাজার ৮২৩ মেট্রিক টন।

চলনবিলের কৃষক রহিম উদ্দিন, রফিকুল ইসলাম, সোলান শেখ জানান, কৃষি বিভাগের পরামর্শে তারা এবার নতুন জাতের বীজ সংগ্রহ করে বীজতলা প্রস্তুত করেছেন। এক সপ্তাহের মধ্যে তা রোপণ করা হবে। তবে তারা পরীক্ষামূলকভাবে দুই-তিন বিঘা করে আবাদ করবেন। 

হালতিবিলের কৃষক মতিউর  রহমান জানান, তারাও পরীক্ষামূলকভাবে নতুন জাতের ধানের বীজ ইতোমধ্যে জমিতে রোপণ করেছেন। আশানুরূপ ফলন হলে আগামীতে আরও বেশি করে এসব জাতের ধান চাষ করবেন এবং বীজ সংগ্রহ করবেন। তবে এসব বীজের প্রতি আশাবাদী তারা।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক সুব্রত কুমার সরকার জানান, এবার জেলার বেশির ভাগ কৃষক নতুন নতুন জাতের বীজ সংগ্রহ করেছেন। বিশেষ করে জিরাশাইলের বিপরীতে ব্রি ধান-৮১ জাত, ব্রি-২৮ ও ২৯ এর বিপরীতে ব্রি ধান-৫৮, ৮১ ও ৮৪ জাত, ব্রি ধান ২৯ এর পরিবর্তে ব্রি ধান-৫৮ জাত এবং স্বর্ণার বিপরীতে ব্রি-৮২ জাতের ধান আবাদ করছেন। এরপরেও কৃষকরা সবচেয়ে বেশি পরিমাণ ধান বীজ রোপণ করছেন ব্রি ধান ২৮ ও ২৯ জাতের। 

গত ১৫ ডিসেম্বর থেকে বোরোর বীজ রোপণ শুরু হয়েছে চলবে মার্চ মাসের ১৫ তারিখ পর্যন্ত। এর কারণ হিসেবে তিনি বলেন অনেক জমিতে সরিষার চাষ হয়েছে। সরিষা তোলার পর কৃষকরা বোরো চাষ করবেন। সে কারণে বোরো আবাদ শেষ হতে সময় লাগবে।

তিনি বলেন, কৃষকদের যথাযথ চেষ্টা আর আবহাওয়া অনুক‚লে থাকলে বোরো ফসলে বা¤পার ফলন হবে। সেই লক্ষ্য নিয়ে কৃষকদের পরামর্শ ও উৎসাহ দেওয়া হচ্ছে।

বিডি প্রতিদিন/আল আমীন

 

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর