নেত্রকোনার বারহাট্টায় সি কে পি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের এক শিক্ষকের অশালীন আচরণের অভিযোগে তার অপসারণ ও শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেছে শিক্ষার্থীরা। মঙ্গলবার দুপুরে বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মুহাম্মদ মাহবুবুর রহমানের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ এনে তার অপসারণ দাবি করা হয়।
বিদ্যালয়ের অদূরে খেলার মাঠে শতাধিক শিক্ষার্থী বেলা সাড়ে ১১টায় মানববন্ধন শেষে বিক্ষোভ মিছিল করে পুরো উপজেলার শহর প্রদক্ষিণ করে। এ সময় পুরো শহরে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। এমনকি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার গাড়িটিও বিক্ষোভকারীদের মাঝে আটকে পড়ে। পরে বিদ্যালয় মোড়ে জড়ো হয়ে বাস্তায় বসে শিক্ষকের অপসারণে নানা শ্লোগান দিতে থাকে শিক্ষার্থীরা। এর আগে, সোমবার সকালেও শিক্ষার্থীরা মিছিলসহ উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে গিয়ে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে মৌখিক অভিযোগ জানায়।
মঙ্গলবার লাগাতার বিক্ষোভের খবর পেয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও এসিল্যান্ড বিদ্যালয়ে গেলে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা জানায়, সবসময়ই শিক্ষক মাহবুবুর রহমান তাদের সাথে খারাপ আচরণ করে থাকেন। ছাত্রীদের নানাভাবে শ্লীলতাহানির চেষ্টা করেন ও গায়ে হাত তোলেন। দীর্ঘদিন ধরে সইতে সইতে এখন সহ্যের বাইরে চলে যাওয়ায় অতিষ্ঠ হয়ে তারা বাধ্য হয় রাস্তায় নামতে। ওই শিক্ষককে অপসারণ ও শাস্তির ব্যবস্থা না করলে কঠোর আন্দোলন কর্মসূচি গ্রহণ করবে বলেও তারা হুঁশিয়ারি দেন।
অভিযুক্ত শিক্ষক মুহাম্মদ মাহবুবুর রহমানের কাছে বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিদ্যালয়ের সকল ছাত্রছাত্রীদের আমার সন্তানের মতো ভালোবাসি। তাদের সাথে অসহনীয় আচরণ আমি করি নাই। ছাত্রছাত্রী শুধু শুধু আমার বিরুদ্ধে মানববন্ধন করছে। আমার কোনো খারাপ উদ্দেশ্য নেই।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুর রউফ জানান, শিক্ষার্থীরা ১১টার পরে স্কুলে আসলে শিক্ষক মাহবুর রহমান জিজ্ঞাসা করেছিলেন দেরি কেন। তখন শিক্ষার্থীরা প্রাইভেটের কথা বললে শিক্ষক প্রাইভেট পড়তেই বলেছেন। স্কুলে আসতে হবে না। খারাপ আচরণের জন্য পরে শিক্ষার্থীরা আন্দোলনে নামে। এর আগে শিক্ষকদের সাথে খারাপ আচরণ করায় বহিষ্কার করা হয়েছিল। এরপর আর শিক্ষকদের সাথে কিছু করেনি। তবে শিক্ষার্থীদের সাথে আচরণ খারাপ করেছে। কিন্তু শ্লীলতাহানি করেনি।
এ বিষয়ে বারহাট্টা উপজেলা নির্বাহী অফিসার এস এম মাজহারুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি অবগত হয়েছি। এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে অভিযুক্ত শিক্ষকে সাময়িক বরখাস্ত করার জন্য শিক্ষা বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে আজই চিঠি লিখে সুপারিশ জানাবো।
জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আ. গফুর বলেন, অভিযুক্ত সহকারী শিক্ষক মূলত শরীরচর্চার শিক্ষক। কিন্তু প্রধান শিক্ষকের মতো তিনি ভাব দেখান। তার বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ উঠেছে। এই বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ব্যবস্থা নেবেন।
বিডি প্রতিদিন/এমআই