রোজা শুরুর আগেই বাগেরহাটের নিত্যপণ্যের কাঁচা বাজারে যেন আগুন লেগেছে। দ্বিগুন দাম বেড়েছে বেগুন, শশা, খিরাই, কাঁচা মরিচের। দুই তিনদিন আগে বেগুনের কেজি ছিলো ৩০ থেকে ৪০ টাকা। আর এখন তা বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকা দরে। ৩০ থেকে ৩৫ টাকার শশা, খিরাই বিক্রি হচ্ছে ৭০/৬৫ টাকায়। ৫০ টাকার কাঁচা মরিচ ও করোলা বিক্রি হচ্ছে ৯০ থেকে ১০০ টাকায়। এছাড়া কেজিতে ২০ টাকা করে দাম বেড়েছে অন্যান্য কাঁচামালেরও।
শনিবার (২ এপ্রিল) সকালে বাগেরহাট ও মোংলার বাজার ঘুরে এমন তথ্য মিলেছে। এমন অবস্থা জেলার উপজেলা সদরের বাজারগুলোতে।
খুচরা কাঁচামাল বিক্রেতা আ. জলিল ও রফিক জানান, বাজারে কাঁচামালের যথেষ্ট সরবরাহ রয়েছে। বাজারে মালের কোনো ঘাটতি নেই। তারপরও পাইকাররা দাম বাড়িয়েছেন তাই তারাও বেশি দামে কিনে বেশি দামে বিক্রি করছেন। ক্রেতারা বলছেন, পাইকারদের সাথে যোগসাজসে স্থানীয় সিন্ডিকেট চক্রই পণ্যের দাম বাড়িয়েছেন। এ নিয়ে ক্ষোভ রয়েছে ক্রেতা সাধারণের। রমজানের শুরুতে প্রশাসনের কঠোর তদারকি না থাকায় সিন্ডিকেট চক্র বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। এসব নিয়ে অবশ্য মাথা ব্যথা নেই স্থানীয় প্রশাসনের।
মোংলা উপজেলা বাজার নিয়ন্ত্রণ কমিটির সদস্য নুর আলম শেখ বলেন, দেশের সব জায়গায় সিন্ডিকেটের মাধ্যমে বাজার নিয়ন্ত্রণ হচ্ছে। তার প্রভাব পড়ছে রমজানের বাজারেও। মানুষের ক্রয় ক্ষমতা বাড়েনি তারপরও দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতি অকল্পনীয়। ফলে জনজীবনে নাভিশ্বাস উঠেছে। গ্রামের বাজারগুলোতে দাম কম থাকলেও সিন্ডিকেট চক্র রমজানের শুরুতে বাজারে দাম দ্বিগুণ বাড়িয়েছে। সিন্ডিকেট না ভাঙলে কোনোভাবেই দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব নয় বলে জানান এই কর্মকর্তা।
বাগেরহাট শহরসহ জেলার ৯টি উপজেলা সদরের বাজারের পাঁচটি সমিতি (মাছ, মাংস, পান, মুরগী ও কাঁচা বাজার সমবায় সমিতি) রয়েছে। এরাই মূলত সিন্ডিকেট করে বাজার নিয়ন্ত্রণ করছেন। তাদের কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছে হাজার হাজার ক্রেতা সাধারণ। মোংলায় এই পাঁচ সমিতির সিন্ডিকেট চক্রের সভাপতি আফজাল ফরাজী, সাধারণ সম্পাদক মোঃ নজরুল ওরফে কসাই নজরুল ও ক্যাশিয়ার আলম ওরফে আলু আলম।
সমিতির নেতা আফজাল ফরাজী বলেন, আমরা আমাদের স্বার্থে অর্থাৎ কোনো ব্যবসায়ী যাতে ক্ষতিগ্রস্থ না হয় সেজন্য এক হয়েছি, ব্যবসায়ীক শক্রদের মোকাবেলা করতে, পণ্যের দাম বাড়ানোর জন্য নয়। যদি কেউ দাম বাড়ায় আমরা তার পক্ষে থাকবো না। যারা অহেতুক দাম বাড়াবে তাদের সাথে আমরা নেই। তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিলে আমরা প্রশাসনের পক্ষে থাকবো বলে দাবি করেন তিনি।
মোংলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কমলেশ মজুমদার বলেন, দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে দুই একদিনের মধ্যে পুলিশ সাথে নিয়ে অভিযান চালানো হবে। এছাড়া প্রত্যেক দোকানে মূল্য তালিকা টানানো বাধ্যতামূলক করা হবে। আর দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে সিন্ডিকেট চক্রও ভাঙা হবে বলেও জানান তিনি।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল