দুই একদিন আকাশে কখনও মেঘ আবার কখনও বৃষ্টি দেখা গেলেও এখন চৈত্রের তাপদাহ শুরু হয়েছে। শুরু হয়েছে পবিত্র মাহে রমজান। আর এ কারণে লাল টুকটুকে গ্রীষ্মের রসালো ফল তরমুজের কদর বেড়েছে। তবে স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত তরমুজ বাজারে আসবে রমজানের শেষের দিকে।
কিন্তু এরমধ্যে বাজার দখল করে নিয়েছে দক্ষিণাঞ্চল থেকে আসা তরমুজ। দামও বেশ চড়া। বর্তমানে কেজি প্রতি তরমুজ বিক্রয় হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকা দরে। চার কেজি ওজনের একটি তরমুজ দুইশ’ টাকার নিচে পাওয়া যাচ্ছে না। বাজার থেকে এসব তরমুজ যাচ্ছে বিত্তবানদের ঘরে। আর তরমুজের দিকে তাকিয়েই থাকতে হচ্ছে নিম্ন আয়ের মানুষদের।
দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন স্থান এবং পাহাড়ি এলাকা থেকে এই তরমুজ দিনাজপুরের ফল ব্যবসায়ীরা তাদের আড়তে এনে বিক্রি করছে। শহরের ফলের দোকানগুলোতে গ্রীষ্মকালীন মৌসুমি ফল তরমুজ প্রচুর পরিমাণে এলেও অনেক চড়া মূল্যে বিক্রি হচ্ছে। আর মূল্য বেশি হওয়ায় ইচ্ছে থাকলেও স্বল্প আয়ের বেশি ভাগ মানুষের এই ফল ক্রয় ক্ষমতার বাইরে।
দিনাজপুর শহর, ফুলবাড়ি, হাকিমপুরসহ বিভিন্ন উপজেলা শহরের বাজারে কিংবা সড়কের পাশে মৌসুমি ফল তরমুজ বিক্রি করতে দেখা গেছে। ফলের দোকানগুলোতে আপেল, কমলা, পেয়ারা, বরইসহ বিভিন্ন ফলের পাশাপাশি মৌসুমি ফল তরমুজও বিক্রি হচ্ছে। প্রতি কেজি তরমুজ বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকা দরে।
ফুলবাড়ির ফুটপাতে কাপড় বিক্রেতা আনোয়ার বলেন, বাজারে নতুন ফল উঠলে সবার মন চায় তা খেতে, কিন্তু ইচ্ছে থাকলে আর কি হবে! আমাদের আয় বুঝে ব্যয় করতে হয়, তাই হিসেব করে চলতে হয়, সে কারণেই এতো দাম দিয়ে ফল কিনে খাওয়া সম্ভব নয়। রিকশাচালক শফিক বলেন, চোখের সামনে নতুন ফল দেখে ছেলে মেয়েদের জন্য কিনতে ইচ্ছা হলেও, দাম বেশি তাই কিনতে পারছি না। ক’দিন গেলে যখন দাম কমবে তখন কিনবো। একটি তরমুজ কিনতে আড়াইশো থেকে তিনশ টাকা লাগবে। সারাদিনে আয় যা হয়, তা দিয়ে চাল-ডাল কিনবো নাকি তরমুজ কিনে খাবো ।
ফল ব্যবসায়ী লিয়াকত আলীসহ ব্যবসায়ীরা জানায়, বর্তমানে বাজারে পতেঙ্গা, কুয়াকাটা বরিশালসহ বিভিন্ন জেলার মোকাম থেকে কালো ও বাংলালিংক জাতের এই তরমুজ কিনে আনছেন তারা। মোকামে তরমুজের আমদানি থাকলেও বেশী দামে কিনতে হচ্ছে, তাই বেশি দামে বেচতে হচ্ছে। তরমুজ বিক্রেতা মাহবুব আলম বলেন, প্রতিবছর এই মৌসুমি ফলের ব্যবসা করি। এ অঞ্চলে তরমুজের আবাদ তেমন হয় না। কয়েকটি এলাকাতে আবাদ হলেও এই সময়ে বাজারে আসে না। আমরা বরিশাল থেকে তরমুজ এনে বিক্রি করি। এর স্বাদ ভালো থাকায় বাজারে চাহিদা আছে। বড় আকারের তরমুজ প্রতিকেজি ৬০ টাকা এবং ছোট আকারের তরমুজ ৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। পিস প্রতি খরচ বাদ দিয়ে ১৫-২০ টাকা করে লাভ থাকছে।
বিডি প্রতিদিন/আবু জাফর