বাগেরহাটের শরণখোলা উপজেলার প্রায় সাত মাস আগের মেয়াদোত্তীর্ণ ইনজেকশন দেওয়া হয় রুমানা আক্তার (২৮) নামে এক টাইফয়েডের রোগীর শরীরে। এই ইনজেকশন দেওয়ার ঘন্টাখানেক পরই জ্বালাযন্ত্রনা ও চুলকানি শুরু হয় তার শরীরে। গত মঙ্গলবার রাতে উপজেলার সাউথখালী ইউনিয়নের চালিতাবুনিয়া বাজারে অবস্থিত সুন্দরবন ফার্মেসীর মালিক গ্রাম্য চিকিৎসক নিয়াজ মাহমুদ ইনজেকশন দেন রোগীর শরীরে। ধীরে ধীরে যন্ত্রণা বাড়তে থাকায় বুধবার রাতে হাসপাতালে ভর্তি করা হয় রোগীকে। বর্তমানে তার শরীরিক অবস্থা কিছুটা উন্নতি হলেও চিকিৎসকরা পর্যবেক্ষণে রেখেছেন তাকে। অসুস্থ রুমানা বেগম বগী গ্রামের বাবুল হাওলাদারের মেয়ে এবং খুলনায় শ্রমিকের কাজে নিয়োজিত জাকির মোল্লার স্ত্রী।
এদিকে, রোগীর শরীরে মেয়াদোত্তীর্ণ ইনজেকশন দেওয়া এবং বিক্রির অভিযোগে বৃহস্পতিবার দুপুরে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে ওই ফার্মেসীটি সিলগালা করে দিয়েছে উপজেলা প্রশাসন। এসময় চালিতাবুনিয়া গ্রামের তোমেজ মাষ্টারের ছেলে ফার্মেসী মালিক নিয়াজ মাহামুদ পালিয়ে যান।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রুমানা বেগমের ভাই রাজিব সোসেন জানান, তার বোন দীর্ঘদিন ধরে জ্বরে ভুগছিলেন। এরপর গত সোমবার রাতে শরণখোলা হাসপাতালে এনে পরীক্ষা করানো হলে তার টাইফয়েড ধরা পড়ে। এসময় হাসপাতালের স্ত্রী রোগ বিশেষজ্ঞ ডা. শেখ তাওহীদুল ইসলাম রোগীর শরীরে ৬টি টাইফয়েড ইনজেকশন দেওয়ার জন্য চিকিৎসাপত্র দেন।
ইনজেকশনের প্যাকেটের গায়ে উৎপাদনের তারিখ ২০১৯ সালের মে মাস এবং মেয়াদোত্তীর্ণের তারিখ ২০২২ সালের জানুয়ারি মাস উল্লেখ রয়েছে।
শরণখোলা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. প্রিয় গোপাল বিশ্বাস বলেন, মেয়াদোত্তীর্ণ ইনজেকশন পুশ করায় পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। তাকে পর্যবেক্ষণে রেখে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
শরণখোলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. নূর-ই আলম সিদ্দিকী বলেন, রোগীর পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ পেয়ে ফার্মেসীতে অভিযান চালানো হয়। কিন্তু মালিক আগেই টের পেয়ে ফার্মেসী বন্ধ করে পালিয়ে যান। পরে তার ফার্মেসীটি সিলগালা করে দেওয়া হয়। মেয়াদোত্তীর্ণ ইনজেকশনগুলো জব্দ করা হয়েছে। গ্রাম্য ওই চিকিসকের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
বিডি প্রতিদিন/এএ