এক পরিবারের ১২ জন সুস্থ-সবল ব্যক্তি প্রতিবন্ধী ভাতা পাচ্ছেন। এদের কেউ ব্যবসায়ী, কারো দোকান, গরুর খামার, হাসের খামার মোরগের খামার আছে। তারপরও নিয়মিত তারা প্রতিবন্ধী ভাতা তুলছেন। এমন অভিনব প্রতারণার ঘটনাটি ঘটেছে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর উপজেলার চাতলপাড় ইউনিয়নে।
উপজেলা সমাজবেসা কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, চাতলপাড় ইউনিয়নের ১২ জন প্রতিবন্ধী ভাতাভোগী নিয়ে যে সমালোচনা হচ্ছে তাদের কেউ প্রকৃত পক্ষে প্রতিবন্ধী না। তাদের অধিকাংশই মৃত প্রতিবন্ধীর স্থলে নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে ও সমাজসেবা কার্যালয়ের জরিপে প্রতিবন্ধী তালিকায় কয়েকজনের নাম অন্তর্ভুক্ত করে সরকারি ভাতা পাচ্ছেন তারা। এ ছাড়া ১২ জন ভাতাভোগীর মধ্যে ৬ জনের ছবি পাওয়া গেছে। বাকিদের প্রতিবন্ধী কার্ড ও কোন তথ্য খোঁজে পাওয়া যায়নি।
উপজেলার চাতলপাড় ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডে ইউপি সদস্য মো. আবু কালাম বলেন, আনেছা বেগমের একই পরিবারের ১২ জন সুস্থ মানুষ প্রতিবন্ধী ভাতা পায়। এটা এলাকার সবাই জানেন। অথচ আমরা জনপ্রতিনিধি হয়েও প্রকৃত প্রতিবন্ধীর নাম অন্তর্ভুক্ত করতে গেলে সমাজসেবা অফিসের কর্মচারীরা হয়রানি করে। এই অনিয়মের সাথে যারা জড়িত তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি তার।
নাসিরনগর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. অভিজিৎ রায় দাবি করেন, ডাক্তাররা প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দেখেই প্রত্যয়ন দিয়েছে। আমার হাসপাতালের কোনো চিকিৎসক অনিয়মের সাথে জড়িত না।
উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা রাখেশ পাল জানান, একই পরিবারের ১০-১২ জন সুস্থ ব্যক্তি প্রতিবন্ধী ভাতা পাচ্ছে। এটা জানার পর আমি ভাতাভোগীদের বাড়িতে গিয়ে যাচাই-বাছাই করে সত্যতা পেয়েছি। তবে অনিয়মটি তিনি এ কর্মস্থলে আসার এক বছর আগেই পূর্বের কর্মকর্তা থাকা অবস্থায় হয়েছে। অনিয়মের সাথে কারা জড়িত জানতে চাইলে বলেন, এখন তদন্ত করা হবে। তদন্তে যাদের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যাবে তাদের আইনের আওতায় আনা হবে।
নাসিরনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ফখরুল ইসলাম বলেন, অনিয়মের বিষয়টি প্রমাণিত। তদন্ত করে খুব দ্রুতই অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বিডি প্রতিদিন/আবু জাফর