মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার ১৬ বছর পর লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন হতে যাচ্ছে ১০ অক্টোবর (সোমবার)। স্থানীয় আ.স.ম. আবদুর রব সরকারি কলেজ মাঠে এ সম্মেলন অনুষ্ঠানের সকল আয়োজন সম্পন্ন করা হয়েছে। মেয়াদ শেষ হওয়ার পর বিগত ১৬ বছরে ১৩ বার এ শাখার সম্মেলনের তারিখ ঘোষণা করা হলেও রহস্যজনক কারণে তা হয়নি। সর্বশেষ ২০০৩ সালের ৩ অক্টোবর আওয়ামীলীগের উক্ত ইউনিটের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
এদিকে এ সম্মেলনকে ঘিরে নেতাকর্মীদের মধ্যে উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে। পছন্দের প্রার্থীর পক্ষে নেতাকর্মী-সমর্থকরা প্রতিযোগিতা দিয়ে ছবিসহ রঙিন ফেস্টুন, বিলবোর্ড, ব্যানার, পোস্টার সাঁটিয়ে প্রচারণা চালাচ্ছেন।
এরিমধ্যে লক্ষ্মীপুর-কমলনগর-রামগতি আঞ্চলিক সড়কের দুই পাশের বেশির ভাগ গাছ,আলেকজান্ডার বাজার ও আশপাশের এলাকা ব্যানার- ফেস্টুুনে সয়লাব হয়ে গেছে। নির্মাণ করা হচ্ছে শতাধিক শুভেচ্ছা তোরণ। কেন্দ্রীয় ও জেলা নেতাদের ছবি দিয়ে প্রচার-প্রচারণা চলছে।
সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির অন্যতম সমন্বয়ক ও জেলা আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক সম্পাদক রাসেল মাহমুদ মান্না জানায়, সম্মেলন সফল করার জন্য ছয়টি উপ-কমিটি গঠন করে এরিমধ্যে পাঁচটি সভায় নেতাদের দায়িত্ব বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে। সম্মেলনস্থলে ১০ থেকে ১৫ হাজার নেতা-কর্মী জমায়েত হবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এ পর্যন্ত সভাপতি পদে সাতজন ও সাধারণ সম্পাদক পদে ১৭ জন প্রার্থী জীবনবৃত্তান্ত জমা দিয়েছেন। সভাপতি পদে আবদুল ওয়াহেদ, আশরাফ আলী চৌধুরী ও আবদুল ওয়াহেদ মুরাদ প্রচারণা চালাচ্ছেন। সাধারণ সম্পাদক পদে পৌর মেয়র এম মেজবাহ উদ্দিন, আবু নাসের, মেজবাহ উদ্দিন হেলাল, আবদুজ্জাহের সাজু, তাওহিদুল ইসলাম সুমন, জাকির হোসেন লিটন চৌধুরী মাঠে সক্রিয় আলোচনায় রয়েছেন।
দলীয় সূত্রে জানা যায়, ২০০৩ সালের ৩ অক্টোবর উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন হয়। সেখানে গোলাম মাওলা চৌধুরী সভাপতি ও আবদুল ওয়াহেদকে সাধারণ সম্পাদক করা হয়। পরবর্তী সময়ে ২০০৬ সালে রামগতি বিভক্তি হয়ে নতুন কমলনগর উপজেলা হয়। এরপর রামগতির আওয়ামী লীগের কমিটির একটি অংশ কমলনগর উপজেলা কমিটিতে নাম লেখায়। এর মধ্যে ২০১৬ সালের ২৬ এপ্রিল গোলাম মাওলা চৌধুরীর মৃত্যুর পর আবদুল ওয়াহেদ মুরাদকে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি করা হয়। এরই মধ্যে কমিটির বেশির ভাগ নেতা মৃত ও নিষ্ক্রিয়। ঝিমিয়ে পড়েছে সাংগঠনিক কার্যক্রম। নিয়ম রক্ষার জাতীয় ও স্থানীয় কর্মসূচিতে অংশ নেন নেতাকর্মীরা।
তাদের দাবী তৃণমূলে দলের ভোট বৃদ্ধিতে যাঁদের অবস্থান রয়েছে এমন নেতৃত্ব গঠন করা হলে এ আসনটিও নির্বাচনে আওয়ামী লীগ পাবে।
রামগতি উপজেলা আওয়ামী লীগের বর্তমান সাধারণ সম্পাদক আবদুল ওয়াহেদ বলেন, ‘করোনাসহ নানা কারণে যথাসময়ে সম্মেলন করা যায়নি।’
লক্ষ্মীপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট নুর উদ্দিন চৌধুরী নয়ন এমপি বলেন, নেতা-কর্মীরা উৎসব মুখর, সম্মেলনের ২য় অধিবেশনে প্রার্থীদের নিয়ে আলাপ আলোচনা করে অথবা ভোটাভুটির মাধ্যমে নেতা নির্বাচন হতে পারে।
সম্মেলনে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ, সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, কৃষি ও সমবায়বিষয়ক সম্পাদক ফরিদুন্নাহার লাইলীসহ কেন্দ্রীয় নেতারা উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে।
বিডি প্রতিদিন/এএম