মানিকগঞ্জে কুকুরের সংখ্যা দিনদিন বেড়েই চলছে। প্রতিদিনই কুকুরের কামড়ে আক্রান্ত হয়ে সদর হাসপাতালে ভ্যাকসিন নিতে ছুটে আসছেন লোকজন। তবে হাসপাতালে পর্যাপ্ত ভ্যাকসিন থাকলেও বাহির থেকে সিরিঞ্জ ক্রয় করতে হচ্ছে তাদের। এতে ক্ষুব্ধ হচ্ছে ভ্যাকসিন নিতে আসা আক্রান্তরা।
সরেজমিনে দেখা যায়, কুকুর-বিড়াল দ্বারা আক্রান্তরা ভ্যাকসিন নিতে হাসপাতালে ভীড় করছেন। কুকুর নিধন বা নিয়ন্ত্রণে কেউ কোন দ্বায়িত্ব নিচ্ছেন না।
সদর উপজেলার মুলজান গ্রামের মোসলেম উদ্দিন বলেন, ভ্যাকসিন নিতে সদর হাসপাতালে আসলে সিরিঞ্জ কিনে ভ্যাকসিন নিতে হলো।
বণপাড়িল এলাকার রিজিয়া আক্তার নামে এক গৃহিণী বলেন, আমার ছোট ভাই পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ে। গত বৃহস্পতিবার হঠাৎ পিছন দিক থেকে এক কুকুর তার পায়ে কামড় বসিয়ে দেয়।
সাবেক শিক্ষক আলমগীর হোসেন বলেন, কিছু দিন আগে আমাকে কুকুর কামড়িয়ে ক্ষতবিক্ষত করে। মানিকগঞ্জ সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসলে এখান থেকে ঢাকার পঙ্গু হাসপাতালে রেফার্ড করে। পরে সেখান থেকে মহাখালীতে পাঠালে প্রায় তিন মাস চিকিৎসা শেষে সুস্থ হই।
তিনি আরো বলেন, যেভাবে কুকুরের বংশবৃদ্ধি পাচ্ছে দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে ভয়াবহ অবস্থা হবে। রাস্তায় বের হলেই পাঁচ-সাতটি বাচ্চা নিয়ে মা কুকুর ঘুরে বেড়ায়। পথচারীরা সবসময় আতঙ্কে থাকেন। প্রতিদিন একশত থেকে দেড়শত লোক কুকুর বিড়াল দ্বারা আক্রান্ত হয়ে ভ্যাকসিন নিচ্ছেন। যা আগের তুলনায় কয়েকগুণ বেশী।
হাসপাতাল থেকে ভ্যাকসিন পেলেও বাহির থেকে সিরিঞ্জ ক্রয় করায় ভুক্তভোগীরা ক্ষুব্ধ। আদালতের নিষেধাজ্ঞার অজুহাতে পৌরসভা কোন ব্যবস্থা নিচ্ছে না। এভাবে কুকুরের বংশ বাড়তে থাকলে রাস্তায় জন সাধারণের চলাচল করা কঠিন হয়ে পড়বে।
মানিকগঞ্জ ২৫০ শয্যা হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মোহাম্মদ বাহাউদ্দিন বলেন, ইদানিং কুকুর বিড়াল সহ বিভিন্ন প্রাণীর কামড়ে আক্রান্ত হয়ে ভ্যাকসিন নিতে আসা রোগীর সংখ্যা বেড়েছে। হাসপাতালে ভ্যাকসিনের কোন সংকট নেই তবে এ কাজে যে সিরিঞ্জ ব্যবহার হয় সে ধরনের সিরিঞ্জ আমাদের কাছে নেই। বাধ্য হয়েই আক্রান্তদের ১০ টাকা দিয়ে সিরিঞ্জ কিনতে হচ্ছে।
পৌর মেয়র মো. রমজান আলী বলেন, আগে প্রতি বছর কুকুর নিধন করা হতো। উচ্চ আদালতের নিষেধাজ্ঞার কারণে কুকুর নিধন বন্ধ রয়েছে। যে হাড়ে কুকুরের বংশ বৃদ্ধি পাচ্ছে তা নিয়ন্ত্রণ না করলে ভয়াবহ রূপ নিবে। কুকুরের বংশ বৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান।
বিডি-প্রতিদিন/বাজিত