৩০ মে, ২০২৩ ২১:৩৫

জেলেদের চাল লুটপাট; বরাদ্দ ৪০ কেজি, বিতরণ ৩০ কেজি

বাউফল (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি:

জেলেদের চাল লুটপাট; বরাদ্দ ৪০ কেজি, বিতরণ ৩০ কেজি

মানবিক কর্মসূচির আওতায় নিবন্ধনকৃত দরিদ্র জেলেদের জন্য ৪০ কেজি চাল বরাদ্দ থাকলেও জেলেদের মাঝে বিতরণ করা হচ্ছে ৩০ কেজি করে। বরাদ্দের বাকি চাল লুটপাটের অভিযোগ উঠেছে পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার নাজিরপুর ইউনিয়ন পরিষদের সচিব ও প্যানেল চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে। শনিবার (২৭ মে) নাজিরপুর ইউনিয়নে জেলেদের মাঝে চাল বিতরণে এমন অভিযোগ পাওয়া যায়।

উপজেলা মৎস্য অফিস সূত্র জানায়, ২০২২-২৩ অর্থবছরে জাটকা আহরণে বিরত থাকা দরিদ্র জেলেদের জন্য মানবিক কর্মসূচির আওতায় নাজিরপুর ইউনিয়নের ৬৮৩ জন নিবন্ধনকৃত জেলেদের ৪০ কেজি হারে ২৭.৩২০ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়।

ওই চাল বিতরণকালে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, নাজিরপুর ইউনিয়ন পরিষদের পাশে ধানদী কামিল মাদ্রাসা মাঠে চাল বিতরণ করছেন ইউপি সদস্যরা। জেলেদের নাম প্রতি ৪০ কেজি চাল বরাদ্দ থাকলেও বিতরণ করা হচ্ছে ৩০ কেজি করে। সরেজমিনে নেই দায়িত্বপ্রাপ্ত ট্যাগ অফিসার ও ইউপি সচিব। সাংবাদিকের উপস্থিতি টের পেয়ে দৌড়ঝাপ শুরু করেন প্যানেল চেয়ারম্যান আলম মেম্বার।

চাল নিয়ে ফেরার পথে ২ নম্বর ওয়ার্ডের জেলে মো. ফিরোজ (৪৭) বলেন, জনপ্রতি ৪০ কেজি করে চাল বরাদ্দ আমাদের। দিছে ৩০ কেজি। তবে বস্তা দেখে মনে হয় ৩০ কেজিরও কম। 

৫নং ওয়ার্ডের জেলে ইউনুছ গাজী ও মো. হাবিব হাওলাদার চাল নিয়ে বাড়ি যাচ্ছেন। তাদের সাথে কথা হলেও তারও জানান, আমাদের নামে নামে ৪০ কেজি করে চাল বরাদ্দ থাকলেও ৩০ কেজি করে দেওয়া হয়েছে। এভাবে সকল জেলেদের মধ্যে ৩০ কেজি করে চাল বিতরণ করা হয়েছে। 

নাম প্রকাশ না করার শর্তে সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানায়, চেয়ারম্যানের উপস্থিতিতে চাল বিরতণ নিয়ে সকল ইউপি সদস্যদের নিয়ে গোপন বৈঠক করেন। ওই বৈঠকে জেলের ৪০ কেজির চালের পরিবর্তে ৩০ কেজি করে চাল বিরতণ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ৬৮৩ জন নিবন্ধনকৃত জেলেদের ১০ কেজি করে চাল কম দিলে তাতে প্রায় ৭ মেট্রিক টন চাল অবশিষ্ট থাকে। যার বর্তমান বাজার মূল্য প্রায় আড়াই লাখ টাকা। ওই টাকা ইউপি সদস্যরা খরচ হিসেবে ভাগ করে নিবেন এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় ওই বৈঠকে। 

এ বিষয়ে প্যানেল চেয়ারম্যান ও ইউপি সদস্য মো. আলম হোসেন বলেন, আমরা চাল যে রকম পাইছি সেরকম দিছি। তবে ৪০ কেজিতে ৩০ কেজি চাল দেওয়া হয়েছে জানতে চাইলে কোনো সদুত্তর দিতে পারেনি প্যানেল চেয়ারম্যান আলম হোসেন।  

নাজিরপুর ইউপি সচিব মো. আবু বকর বলেন, বরাদ্দ কম, তাই বাকি জেলেদের সাথে সমন্বয় করতে চালও কম দেয়া হচ্ছে।

এ বিষয়ে উপজেলা সিনিয়র সহকারী মৎস্য অফিসার মো. মাহবুবুর রহমান বলেন, বরাদ্দের চেয়ে নাম বেশি থাকায় ২ কেজি করে কম দিয়ে সমন্বয়ের কথা বলা হয়েছে।

বিডি প্রতিদিন/হিমেল

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর