ঈদ সামনে রেখে নাড়ির টানে বাড়ির পথ ধরেছে বাগেরহাটের কয়েক লাখ মানুষ। ঈদে সরকারি ছুটি শুরু হওয়ায় মঙ্গলবার বাগেরহাট বাস টার্মিনালে ছিল উপচে পড়া ভিড়। রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন টার্মিনাল থেকে ছেড়ে আসা দূরপাল্লার পরিবহনসহ আন্তঃজেলা যানবাহনের চাপ থাকলেও ছিল না যানজট। তবে, আনন্দের ঈদ যাত্রায় দিনভর বৃষ্টি ভোগান্তি সৃষ্টি করেছে।
আনন্দের ঈদ যাত্রায় বৃষ্টি কিছুটা ভোগান্তি বাড়ালেও আটকাতে পারেনি ঘরমুখো মানুষদের বাড়ি ফেরা। বাগেরহাট কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল ও বিভিন্ন স্টপেজে নেমে ঘরমুখো যাত্রীরা ছাতা মাথায় দিয়ে পায়ে হেঁটে, পলিথিনের পর্দা ঝুলিয়ে, বাস চেপে কিংবা অটোরিকশা করে বাড়ির পথ ধরেছেন। পথে পথে বৃষ্টির ঝাপটায় ভিজে গেছে তাদের সঙ্গে থাকা ব্যাগ। বাড়তি ভাড়াও গুনতে হয়েছে। শেষ পর্যন্ত বৃষ্টির বিপত্তি ভুলে হাসিমুখেই বাড়ি ফিরেছেন তারা।
বাগেরহাট বাস টার্মিনালে কথা হয় ঢাকা থেকে আসা দোলা পরিবহনের যাত্রী শহিদুল ইসলামের সাথে। তিনি জানান, বৃষ্টি উপেক্ষা করেই পরিবার নিয়ে ঢাকার গুলিস্থান দোলা পরিবহনের কাউন্টারে আসেন। পরিবহনে উঠে যানজট বা ভোগান্তি ছাড়াই বাগেরহাটে নেমে বৃষ্টির মধ্যে পড়তে হয়েছে তাদের। মাথায় পলিথিনের শপিং ব্যাগ দিয়ে পরিবারের চার সদস্য বৃষ্টিতে ভিজে রিক্সাভ্যানে করে কচুয়ার গ্রামের বাড়িতে রওনা দেন তারা।
বাগেরহাট বাস টার্মিনালে বাসের জন্য অপেক্ষায় থাকা মোড়েলগঞ্জের বাসিন্দা জামাল শেখ বলেন, সকাল থেকেই বৃষ্টি। ঢাকা থেকে পরিবার নিয়ে অনেক কষ্ট করে বাগেরহাট পৌঁছেছি। এখন মোরেলগঞ্জ যাবার জন্য বাসের অপেক্ষায় রয়েছি। এত কষ্ট করে ঈদ উপলক্ষ্যে পরিবার নিয়ে বাড়িতে ফেরাটাই সকল কষ্ট দূর করে দিয়েছে।
শিক্ষার্থী এনামুল ইসলাম বলেন, অনেক কষ্ট করে বৃষ্টি উপেক্ষা করে চট্টগ্রাম থেকে এসে এখন গ্রামের বাড়ি বাগেরহাটের শরণখোলায় যাচ্ছি। পলিথিন মাথায় দিয়ে কোনো রকম বৃষ্টির পানি আটকানোর চেষ্টা করেছি। তারপরও প্রায় পুরোটাই ভিজে গেছি। এত ভোগান্তি ও বিড়াম্বনার পর বাড়িতে গিয়ে পরিবারের সাথে ঈদ করব, এই আনন্দ সকল কষ্ট দূর করে দিয়েছে।
বাগেরহাটে দোলা পরিবহনের চালক আসলাম শেখ বলেন, পদ্মা সেতু খুলে দেওয়ার পর থেকে যাত্রীদের ঈদযাত্রার কষ্ট নেই। সড়ক মাহা-সড়কে গাড়ির কিছুটা চাপ থাকলেও যানজট নেই। তারপরও সকাল থেকে থেমে থেমে বৃষ্টি কিছুটা ভোগান্তি বাড়িয়েছে। তবে, গাড়িগুলো সঠিক সময়ে গন্তব্যে পৌঁছাচ্ছে।
বাগেরহাট ওয়েলকাম পরিবহনের কাউন্টারের ম্যানেজার সালমান মুহাইমিন বলেন, এখন ঘরমুখো যাত্রী আসার চাপ আছে। তবে সড়কে কোনো ভোগান্তি নেই। বাগেরহাট থেকে ফিরতি দূরপাল্লার পরিবহনগুলো প্রায় খালিই যাচ্ছে।
বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল