কুষ্টিয়ায় সারের বাজারে অস্থিরতা চলছে। কোথাও সরকার নির্ধারিত দামে বিক্রি হচ্ছে না সার। এতে কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্ত হলেও কোথা থেকে বাড়ানো হচ্ছে দাম তা নিয়ে পাল্টাপাল্টি বক্তব্য বিক্রেতা ও ডিলারের।
কুষ্টিয়ার বাজার ঘুরে দেখো গেছে, প্রায় সব জায়গাতেই কৃষকদেরকে কেজিতে ৩ থেকে ৫ টাকা বেশি দিয়ে কিনতে হচ্ছে সার। দোকানে সরকারি মূল্য তালিকা টানানো থাকলেও তা মানছেন না বিক্রেতারা। তালিকায় ইউরিয়া ২৭ টাকা, ডিএপি ২১ টাকা, টিএসপি ২৭ টাকা ও এমওপি সারের দাম ২০ টাকা লেখা আছে। সরকার নির্ধারিত এই দামে সার না পেয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন কৃষকরা।
কৃষক রবিউল বলেন, ইউরিয়া ২৯-৩০ টাকা কেজি কিনেছি। ফসফেট সারের দাম কেউ ২৭ নিচ্ছে, কেউ ধরছেন ২৮ টাকা। সোহেল বলেন, সব ধরণের কীটনাশকের দামও বেশি। দোকানদারদের বললে তারা বলে সরকারি রেট বেশি আমরা কম দামে কীভাবে দেবো। আব্দুল বলেন, দাম বেশি হওয়ার কারণে ফসলে ঠিকমতো সারই দিতে পারছি না। দাম না কমানো হলে বাড়বে উৎপাদন ব্যয়। এতে চাষাবাদ কমে যাবে বলছেন কৃষকরা।
বেশি দামে সার বিক্রির কথা স্বীকার করে খুচরা বিক্রেতারা দুষছেন ডিলারদের। মেসার্স বায়েজিদ এটারপ্রাইজের আতিয়ার রহমান বলেন, আমরা ডিলারদের কাছ থেকে যে দামে কিনে আনছি তার থেকে ১ টাকা লাভে বিক্রি করি। এসএস ট্রেডার্সের মাসুদ আলম বলেন, ডিলাররা কখনই সরকারি দরে মাল ছাড়েন না। বেশি না দিলে বলেন সার নেই।
তবে বেশি দামে সার বিক্রির কথা অস্বীকার করে ডিলাররা দুষছেন খুচরা বিক্রেতাদের। কুষ্টিয়া সার ডিলার এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক আক্কাস আলী দাবি করেন, খুচরা বিক্রেতারাই মূলত দাম বাড়িয়ে দিচ্ছেন। তারা কৃষকদের বাকিতে সার দেন। সে কারণে দাম বেশি নেন। কৃষকের বেশি দামে নেয়া ছাড়া কোন উপায় থাকে না। ডিলাররা বেশি দামে সার বিক্রি করেন না বলে দাবি করেন তিনি।
আর সারের বাজারের এমন নৈরাজ্য ঠেকাতে অভিযান চালাচ্ছেন কর্মকর্তারা। কুষ্টিয়ার সিনিয়র কৃষি বিপনন কর্মকর্তা সুজাত হোসেন খান বলেন, ফসলের উৎপাদন খরচ কমাতে হলে বেশি দামে সার বিক্রি বন্ধ করতে হবে। এই লক্ষ্যে আমরা প্রায়ই অভিযান চালিয়ে সার বিক্রেতাদের জরিমানা করছি। কিন্তু চালাকি ও সিন্ডিকেটের কারণে তাদের পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না। অভিযানের কারণে সবসময় ম্যাজিস্ট্রেট ও পুলিশ পাওয়া যায় না।
কুষ্টিয়া কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ড. হায়াত মাহমুদ বলেন, বেশি দামে সার বিক্রির কোন সুযোগ নেই। সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি।
বিডি প্রতিদিন/এএ