১৯ এপ্রিল, ২০২৪ ০৬:০২

স্বর্ণ চুরির অপবাদে কিশোরী গৃহকর্মীকে গরম খুন্তির ছ্যাকা

নিজস্ব প্রতিবেদক, রংপুর

স্বর্ণ চুরির অপবাদে কিশোরী গৃহকর্মীকে গরম খুন্তির ছ্যাকা

স্বর্ণ চুরির অপবাদ দিয়ে বেধড়ক মারপিটসহ গরম খুন্তির ছ্যাকা দেয়া হয়েছে এক কিশোরীকে।  গৃহকর্মী নাজিরা এখন রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন  ইউনিটে মৃত্যু যন্ত্রণায় ছটফট করছে। ঘটনাটি ঘটেছে ঢাকায় হযরত শাহজালাল বিমানবন্দরে উচ্চমান সহকারী হিসেবে কর্মরত আনোয়ার হোসেনের বাসায়। 

বার্ন ইউনিটের চিকিৎসক ডা. শাহীন শাহ জানান, গত বুধবার নাজিরাকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করানো হয়। তার ঘাড়, পিঠসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে গরম খুন্তির ছ্যাকা দেওয়া হয়েছে। এ পর্যন্ত কোনো সঠিক চিকিৎসা না হওয়ায় ওই স্থানগুলোতে ইনফেকশন হয়েছে। আমরা আমাদের সাধ্যমত চেষ্টা করছি। তার অবস্থা শঙ্কামুক্ত নয়।
 
নাজিরা গাইবান্ধার ফুলছড়ি উপজেলার পূর্ব বালয়াপাড়ার বাসিন্দা দৃষ্টি প্রতিবন্ধী ইসা খা আর অসুস্থ জোছনা বেগম দম্পতির কন্যা। অভাবের সংসারে কিছুটা ভার কমাতে গত রমজান মাসে স্থানীয় প্লাবন নামের যুবকের মাধ্যমে নাজিরাকে গৃহকর্মী হিসেবে ঢাকায় পাঠান বাবা-মা। 

হাসপাতালের বেডে শুয়ে ভুক্তভোগী নাজিরা বলেন, কাজে যোগদানের পর থেকেই নানা অজুহাতে তাকে বেধরক মারধর করত গৃহকর্তা আনোয়ারের স্ত্রী (নাম জানা নেই)। ঈদের পর স্বর্ণ চুরির অপবাদ দিয়ে গরম খুন্তি দিয়ে আমার শরীরের বিভিন্ন স্থানে ছ্যাকা দেয় ওই গৃহকর্ত্রী। খবর পেয়ে গত ১৩ এপ্রিল গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় আমার দাদা ঢাকা থেকে আমাকে গাইবান্ধার বাড়িতে নিয়ে আসেন। 

নাজিরার মা জোছনা বেগম জানান, ঢাকা থেকে নিয়ে আসার পরদিন খুব অসুস্থ বোধ করলে নাজিরাকে গাইবান্ধা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ১৭ এপ্রিল ওই হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র দিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য বলা হলে তাকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন তারা। বর্তমানে মেয়ের অবস্থা ভালো নয় জানিয়ে তিনি আরো জানান, পারিবারিক আর্থিক সমস্যার কারণে রমজান মাসে প্লাবন নামের এক যুবকের মাধ্যমে নাজিরাকে ঢাকায় পাঠানো হয়। প্লাবন বিমানবন্দরের উচ্চমান সহকারী আনোয়ার হোসেনের বাসায় তাকে গৃহকর্মী হিসেবে রাখে। কাজে যোগদানের পর থেকেই আনোয়ার হোসেনের স্ত্রী নির্যাতন করতো নাজিরাকে। সর্বশেষ ঈদের পর স্বর্ণ চুরির মিথ্যা অপবাদ দিয়ে গরম খুন্তি দিয়ে তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে ছ্যাকা দেয়ার অভিযোগ করেন নাজিয়ার মা।  এবিষয়ে আনোয়ার হোসেন ও  কিশোরীর বাহক প্লাবনের সাথে মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলে কেউ ফোন রিসিভ করেননি। 

বিডি প্রতিদিন/হিমেল

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর