নকশিকাঁথা ট্রেনের যাত্রা বিরতির দাবিতে ১৬২ বছরের পুরাতন দেশের সর্বপ্রথম রেল স্টেশন কুষ্টিয়ার জগতিতে ঢাকাগামী বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেন দুই ঘণ্টা আটকে রেখে বিক্ষোভ করেছেন এলাকাবাসী।
শুক্রবার বিকেল ৪টা ৫৬ মিনিটে ট্রেনটি থামানোর পর দাবি পূরণে জেলা প্রশাসক আশ্বাস দিলে ছেড়ে দেওয়া হয় ৬টা ৫০ মিনিটে।
ট্রেন ছাড়ার মুহূর্তে আন্দোলনরতরা মাইকে ঘোষণা দেন কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক মো. তৌফিকুর রহমান আশ্বাস দিয়েছেন এখন থেকেই নকশিকাঁথা ট্রেনটি এখানে থামবে। পর্যায়ক্রমে অন্যান্য দাবিও মেনে নেওয়া হবে।
দেশের প্রথম দিককার এই রেল স্টেশনের ১৬২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর দিন ছিল শুক্রবার। এ উপলক্ষে স্টেশন প্রাঙ্গণে আয়োজন করা হয় আলোচনা সভার। সেখান থেকেই এলাকাবাসী বেনাপোল এক্সপ্রেস আটকে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন।
তাদের দাবিগুলো ছিল-জগতি রেল-ভবনের সংস্কার করতে হবে, জগতি রেল স্টেশনকে আধুনিকায়ন করতে হবে, বাংলাদেশের প্রথম রেল স্টেশন হিসেবে অত্র এলাকাবাসীকে সব যাত্রা বা ভ্রমণের ব্যবস্থা করতে হবে, জগতি স্টেশনের টিকিট অনলাইনে কেনার ব্যবস্থা করতে হবে, জগতি রেল স্টেশনের প্রথম রেল ভবনকে প্রত্নতাত্ত্বিক মন্ত্রণালয়ের অন্তর্ভুক্ত করতে হবে এবং জগতি রেল স্টেশনের পুরোনো ভবনের ছবি অনলাইন টিকিটের সঙ্গে যুক্ত করতে হবে।
ট্রেন থামার পর বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠক করেন ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে মোবাইল ফোনে কথা বলিয়ে দেন রেলওয়ের খুলনা বিভাগের গার্ড (গ্রেড-২) ও আটকে থাকা বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনের পরিচালক মাহবুব ইসলাম। কিন্তু কোনো কিছুতেই বিক্ষোভরতরা বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনটি ছাড়তে রাজি ছিলেন না।
একপর্যায়ে এলাকাবাসীর সঙ্গে বিক্ষোভে একাত্মতা পোষণ করতে আসেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন কুষ্টিয়া জেলা শাখার আহ্বায়ক মো. হাসিবুর রহমান। পরে ৬ টা ৪৮ মিনিটের দিকে হাসিবুর রহমান মাইকে ঘোষণা দেন কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক আমাদের দাবি মেনে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন। আজ থেকেই জগতি স্টেশনে নকশিকাঁথা ট্রেনটি থামবে। পর্যায়ক্রমে অন্যান্য দাবিও পূরণ হবে। অন্যথায় আমরা কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করব।
বিষয়টি নিয়ে রেলওয়ের খুলনা বিভাগের গার্ড (গ্রেড-২) ও আটকে থাকা বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনের পরিচালক মাহবুব ইসলাম বলেন, কর্তৃপক্ষকে বিক্ষোভকারীদের দাবিগুলো জানানো হয়েছে। কর্তৃপক্ষ সেগুলো পূরণ করার আশ্বাস দিয়েছেন।
এ বিষয়ে কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসক মো. তৌফিকুর রহমান বলেন, আজকের মতো যেসব ট্রেন আসার কথা, সেগুলো থামবে। কিন্তু এটা স্থায়ী কোনো সমাধান নয়। ঢাকা থেকে এগুলোর সিডিউল করা হয়, ওখান থেকে ফাইনালাইজড করা হলে স্থায়ী সমাধান আসতে পারে।
তিনি বলেন, বিভাগীয় কমিশনার স্যারকে এ বিষয়ে অবহিত করা হয়েছে।
বিডি-প্রতিদিন/বাজিত