নেত্রকোনার পুর্বধলায় বোনের দেবরের কু-প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় গৃহবধূ লিপি আক্তারের খুনের দায়ে মো রাসেল মিয়ার (২৮) মৃত্যুদন্ডাদেশ দিয়েছেন আদালত। সেই সাথে ৫০ হাজার টাকা অর্থদন্ড দেয়া হয়। বৃহস্পতিবার দুপুরে জেলা ও দায়রা জজ মো. হাফিজুর রহমান এ রায় ঘোষণা দেন। সাজাপ্রাপ্ত আসামী রাসেল মিয়া পূর্বধলার পশ্চিমপাড়া গ্রামের আলাল উদ্দিনের ছেলে।
জানা গেছে, নজরুল ইসলামের শালিকা লিপি আক্তারের স্বামী বিজিবির চাকুরির সুবাদে পঞ্চগড় থাকায় ছেলে সন্তান নিয়ে বড় বোনের বাড়িতে বসবাস করতেন লিপি। একই সাথে থাকার সুবাদে বড় বোনের দেবর মো. রাসেল মিয়া প্রায়শই উত্যক্ত করতো এবং কুপ্রস্তাব দিতো বলে অভিযোগ ওঠে। এইসব বিষয় জানাজানি হলে রাসেলের পরিবার ও স্থানীয়রা দরবার করে মীমাংসা করার চেষ্টা করেন।
কিন্তু এক পর্যায়ে গেল ২০২০ সনের ৪ অক্টোবর মাঝরাতে গৃহবধু লিপি আক্তারের গলায় ইন্ডিকাটার দিয়ে পোজ দিয়ে রাসেল নিজেও আহত হয়ে পড়ে থাকেন। মায়ের সাথে ঘুমানো শিশু পুত্র আলিফ ওঠে কান্নাকাটি চিৎকার করলে প্রতিবেশিরা ঘরের দরজা খোলা দেখতে পায়। খবর পেয়ে পূর্বধলা থানার পুলিশ গিয়ে লাশ উদ্ধার করে এবং আহত রাসেলকে ময়মনসিংহ মেডিকেলে প্রেরণ করে। এ ঘটনায় পরের দিন ৫ অক্টোবর লিপির বড় বোন ফেরদৌসী আক্তার বাদী হয়ে থানায় মামলা দায়ের করেন।
মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণে জানা যায়, বড় বোনের বাড়িতে থাকার সুবাদে লিপি আক্তারকে বাড়িতে ও রাস্তা-ঘাটে সুযোগ পেলেই রাসেল মিয়া প্রেম নিবেদন ও কু-প্রস্তাবসহ উত্যক্ত করতেন। এক পর্যায়ে বিষয়টি লিপি তার স্বামীসহ বোন জামাই নজরুল ইসলাম ও রাসেলের বাবা মাকে জানায়।
গত ২০২০ সালের ৩ অক্টোবর রাতে লিপি আক্তার রাতের খাবার খেয়ে ছেলে এস.এম আলিফকে নিয়ে পশ্চিম ভিটির বসতঘরের দক্ষিণ পাশের রুমে ঘুমিয়ে পড়েন। সুকৌশলে রাসেল রাতের কোন এক সময় ঘরে ঢুকে ধারালো এন্টিকাটার দিয়ে লিপি আক্তারের গলার শ্বাসনালী কেটে হত্যা করে। বড় বোন ফেরদৌসী আক্তার বাদী হয়ে পূর্বধলা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করলে মোট ১৫ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে অপরাধ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণ হওয়ায় আদালত রাসেল মিয়াকে মৃত্যুদন্ডাদেশ ঘোষণা দেন।
বিডি প্রতিদিন/এএম