গাইবান্ধার পলাশবাড়ীতে প্রসূতি মা ও নবজাতকের মৃত্যুর ঘটনায় মা ক্লিনিক এন্ড নার্সিং হোমকে সিলগালা করা হয়েছে। সেই সাঙ্গে ঘটনার তদন্তে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন স্বাস্থ বিভাগ।
নিহত প্রসূতি পারুল বেগম (২৫) পলাশবাড়ী পৌর শহরের জামালপুর এলাকার বাদশা মিয়ার মেয়ে ও উপজেলার মহদীপুর ইউনিয়নের বিশ্রামগাছী এলাকার শামিম মিয়ার স্ত্রী।
রবিবার দুপুরে বিষয়টি নিশ্চিত করেন গাইবান্ধার সিভিল সার্জন ডা. মো. রফিকুজ্জামান। এর আগে শুক্রবার দিবাগত রাতে ওই ক্লিনিকে সিজারিয়ান অপারেশনের পর প্রসূতি ও নবজাতক দুজনেই মৃত্যুবরণ করেন। পরে শনিবার সকালে রোগীর স্বজনরা বিক্ষুব্ধ হয়ে ক্লিনিকটি ভাঙচুর করে। এরপর থেকে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়।
সিভিল সার্জন ডা. মো. রফিকুজ্জামান বলেন, মা ও নবজাতকের মৃত্যুর ঘটনায় তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। সেই সঙ্গে ক্লিনিকটি অস্থায়ীভাবে বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। ঘটনার পর রাতেই এসব কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়।
তিনি বলেন, চিকিৎসক বা এনেস্থেসি বিশেষজ্ঞের অবহেলার কারণেই এমন মৃত্যু হতে পারে। তদন্ত রিপোর্ট হাতে পেলে সঠিক কারণ জানা যাবে। ক্লিনিকটি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে এবং পরবর্তীতে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ডা. মো. রফিকুজ্জামান বলেন, এর আগেও ওই ক্লিনিকের বিরুদ্ধে অভিযোগের পর দেড় মাসের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছিল।
নিহতের স্বজন ও স্থানীয়রা জানান, শুক্রবার সন্ধ্যায় প্রসূতি পারুল বেগমকে সিজার করার জন্য মা ক্লিনিকে নেওয়া হয়। পরে রাত ১১ টার দিকে তার সিজার শুরু করে ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ। এতে ভোর ৪ টার দিকে প্রসূতি রোগী মৃত্যুর কোলে ঢলে পরেন। ভুল চিকিৎসায় মৃত্যু হয়েছে রোগীর স্বজনেরা বিষয়টি বুঝতে পেরে মা ক্লিনিক এন্ড নার্সিং হোম এ ভাঙচুর করে ও অগ্নিসংযোগের চেষ্টা করে। পরে সেনাবাহিনী-পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। পরে সুযোগ বুঝে ক্লিনিকের ভবনে তালা ঝুলিয়ে পালিয়ে যান ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ ও ভবন মালিক। এরপর জেলা স্বাস্থ বিভাগ ক্লিনিকটি সিলগালা করে দেয়।
স্থানীয়দের অভিযোগ, মা ক্লিনিকে একের পর এক মৃত্যুর ঘটনা ঘটছে, অথচ প্রশাসনের নজরদারি নেই। এবার যদি কঠোর ব্যবস্থা না নেওয়া হয়, তাহলে এমন মৃত্যু আরও ঘটবে।
জানা গেছে, মা ক্লিনিক এন্ড নার্সিং হোমের মালিক পলাশবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সিনিয়র স্টাফ নার্স ফাতেমা বেগম। এর আগেও ভুল চিকিৎসার অভিযোগে ওই ক্লিনিক বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছিল, কিন্তু পুনরায় অনুমতি নিয়ে কার্যক্রম শুরু করেন ক্লিনিক কতৃপক্ষ।
বিডি প্রতিদিন/এএম