সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ‘বিগো লাইভ’ অ্যাপে পরিচয়, সেখান থেকে প্রেম এবং ভিডিও কলে বিয়ে। প্রেমিকার কথায় বিদেশে বসেই কেনেন জমি, বানান বাড়ি ও গরুর ফার্ম। কিন্তু পরে জানতে পারেন, সেই প্রেমিকা আসলে বিবাহিত নারী! বিষয়টি জানতে পেরে দেখা করতে গেলে তাকে শরবতে বিষ মিশিয়ে হত্যার চেষ্টা করা হয় বলে অভিযোগ উঠেছে।
গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলার কচুয়ায় এ ঘটনায় প্রেমিকা সুরাইয়া আক্তার মৌ, তার স্বামী দিপু রানা এবং ছোট ভাই নয়নকে গ্রেফতার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠিয়েছে পুলিশ।
রবিবার (১৯ অক্টোবর) বিকেলে বিষয়টি নিশ্চিত করেন সাঘাটা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বাদশা আলম। এর আগে ১৭ অক্টোবর ভুক্তভোগী প্রবাসী শাফিউল হক বাদী হয়ে মামলা করেন। পরদিন পুলিশ আসামিদের গ্রেফতার করে আদালতে পাঠায়।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, কক্সবাজারের রামু উপজেলার কাইম্যারঘোনা এলাকার মৃত গোলাম কবিরের ছেলে শাফিউল হক (৩৫) দীর্ঘ ২১ বছর ধরে সৌদি আরবে কর্মরত। ২০২০ সালে ‘বিগো লাইভ’ অ্যাপের মাধ্যমে গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলার কচুয়া এলাকার সুরাইয়া আক্তার মৌয়ের সঙ্গে তার পরিচয় হয়। ধীরে ধীরে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে এবং একপর্যায়ে ভিডিও কলে বিয়ে করেন তারা।
প্রবাসে অবস্থানকালে প্রেমিকার পরামর্শে শাফিউল তার (প্রেমিকা) নামে ছয় শতাংশ জমি কেনেন। সেখানে তিনি একটি ঘর ও গরুর ফার্ম নির্মাণ করেন। অভিযোগ অনুযায়ী, বিদেশ থেকে প্রেমিকার কাছে প্রায় ৫০ লাখ টাকা পাঠান শাফিউল।
কিন্তু এক বছর আগে তিনি জানতে পারেন, সুরাইয়া আক্তার মৌ ইতোমধ্যেই বিবাহিত এবং তার স্বামীর নাম দিপু রানা। এরপর থেকেই তাদের সম্পর্কে ফাটল দেখা দেয়। গত ১০ আগস্ট দেশে ফিরে শাফিউল বিষয়টি মীমাংসার জন্য দেখা করতে গেলে মৌ তাকে বাড়িতে ডেকে নেয়। এসময় মৌ, তার স্বামী দিপু রানা এবং ভাই নয়ন উপস্থিত ছিলেন। একপর্যায়ে মৌ তাকে শরবত পান করান। শরবত খাওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যেই অচেতন হয়ে পড়েন তিনি। পরে স্থানীয়রা উপজেলার মানিকগঞ্জ বাজার এলাকার একটি মুরগির ফার্মের পাশে অচেতন অবস্থায় শাফিউলকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেন। জ্ঞান ফিরে তিনি জানতে পারেন, শরবতে বিষ মিশিয়ে তাকে হত্যার চেষ্টা করা হয়েছিল।
সাঘাটা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বাদশা আলম বলেন, ঘটনার পর তিনজনকে গ্রেফতার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। মামলাটি তদন্তাধীন রয়েছে।
বিডি-প্রতিদিনি/মাইনুল