জলপাইয়ের কথা উঠলেই জিহ্বায় জল আসে প্রায় সব বাংলাদেশি মানুষের। জলপাইয়ের কথা শুনলেই স্মৃতিতে ফিরে আসে সুকুমার রায়ের সেই বিখ্যাত অবাক জলপান নাটকের কথা। ছোটবেলায় জলপাই নিয়ে এমন হাসির নাটক পড়ে প্রায়ই সবাই হেসেছি আমরা। সেই জলপাইয়ের বিরাট হাট বসে উত্তরের জেলা পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জ উপজেলা শহরের দেবদারু তলায়। লোকে বলে এটা বাংলাদেশের মধ্যে সবচেয়ে বড় জলপাইয়ের হাট। আশে পাশের পাঁচ জেলার সব জলপাই আসে এই বাজারে।
দিনের শুরু ভোর বেলা থেকেই জমতে শুরু করে দেবদারু তলার ঐতিহ্যবাহী জলপাই হাট। ভ্যানে, পিকআপ বা ট্রাকে করে জলপাই আনতে শুরু করে কৃষক, ব্যবসায়ীরা। তারপর স্তুপ করে বাছাই করা হয়। এর পর চলে বেচা বিক্রী। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে জলপাই ব্যবসায়ীরা এসে কিনছেন জলপাই। বিদেশেও হয় রপ্তানী। প্রতিবছর অক্টোবর মাস থেকে শুরু হয় জলপাই আহরণ। মৌসুমের তিনমাস ধরে বেচা কেনা চলে জলপাই। চাষিরা বলছেন ৩০ থেকে ৫০ টাকা কেজি দরে জলপাই বিক্রী করেন তারা। গ্রামীণ কৃষকরা জলপাই গাছ থেকে প্রতি বছর জলপাই থেকে লাখ লাখ টাকা আয় করছেন।
হাট ইজারাদার রানা হোসেন জানান, এটা একটা ঐতিহ্যবাহী জলপাইয়ের হাট। এ ছাড়া এই হাটে বাতাবি লেবু, লেবু, পানসহ কৃষকের উৎপাদিত নানা ধরনের ফল বিক্রী হয়। তবে জলপাই বেশি কেনা বেচা হয়। আশে পাশের কয়েকটি জেলার জলপাই বিক্রী হয় এই বাজারেই। হাজার হাজার মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে। কারণ দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে ব্যবসায়ীরা এসে এখান থেকে জলপাই কিনে নিয়ে যায়।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর বলছে জলপাইয়ের এই হাটটি প্রতিনিয়ত সম্প্রসারিত হচ্ছে। সেই সাথে বাড়ছে জলপাইয়ের চাহিদা। উপজেলা কৃষি অফিসার নাঈম মোর্শেদ জানান, এই হাটটির কারণে জলপাই চাষাবাদও বাড়ছে। আমরা চাষিদের খোঁজ খবর রাখছি। জলপাই চাষ করে চাষিরা লাভবান হচ্ছে।
বিডি-প্রতিদিন/সালাহ উদ্দীন