মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করা মাদকের স্রোত বন্ধ করতে প্রয়োজনে ভেনেজুয়েলায় স্থল অভিযান চালানো হবে। “এবার ভূখণ্ডই হবে পরের লক্ষ্য,” তিনি বলেন। হোয়াইট হাউসে সাংবাদিকদের সামনে এই ঘোষণা দেন তিনি এবং প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথকে কংগ্রেসকে পরিকল্পনার কথা জানাতে নির্দেশ দেন।
ট্রাম্পের মন্তব্যের পর থেকেই আন্তর্জাতিক মঞ্চে জোরালো আলোচনা শুরু হয়েছে যে, যুক্তরাষ্ট্র কি ভেনেজুয়েলাকে পরবর্তী রণক্ষেত্র হিসেবে বিবেচনা করছে। তিনি বলেন, “এবার ভূখণ্ডই হবে পরের লক্ষ্য… পিট, তুমি কংগ্রেসে যাও, তাদের এটা জানাও। তারা কী করবে? বলবে—‘আমরা চাই না যে আমাদের দেশে মাদক ঢোকা বন্ধ হোক?’” এবং আরও যোগ করেন, “আমরা শুধু তাদের মেরে ফেলব যারা আমাদের দেশে মাদক আনছে—তারা মৃত হবে।”
এ ধরনের স্থলভিত্তিক লক্ষ্যবস্তুর উপর আঘাত হলে ওয়াশিংটনের সঙ্গে ভেনেজুয়েলার উত্তেজনা আরও বাড়বে। এর প্রেক্ষিতে ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরো দেশে সেনা মোতায়েন বাড়িয়েছেন; গত সেপ্টেম্বরেই তিনি ১৫ হাজার সেনা মোতায়েনের ঘোষণা দেন এবং পরে আরও কয়েকটি অঙ্গরাজ্যে সেনা পাঠিয়েছেন। মাদুরো দাবি করেছেন, “এই ভূমিকে কেউ ছুঁতে পারবে না,” এবং যুক্তরাষ্ট্রের অভিযোগ যে ভেনেজুয়েলায় কোকেন উৎপাদন হচ্ছে — তা নাকচ করেছেন।
ট্রাম্প প্রশাসন ইতোমধ্যে দক্ষিণ ক্যারিবীয় সাগরে একাধিক সন্দেহভাজন মাদকবাহী নৌকায় হামলা চালিয়েছে; এসব অপারেশনের সূত্র ধরে ওয়াশিংটন যে স্থলভিত্তিক লক্ষ্যবস্তুতে আগ্রাসন বাড়াতে পারে, সেই আশঙ্কা বেড়েছে। এডমিনিস্ট্রেশন আরও জানিয়েছে যে, সুসংহত পরিকল্পনা বিষয়ে কংগ্রেসকে জানানো হবে।
নীতিগতভাবে, বিদেশে সামরিক প্রয়োগ, বিশেষত স্থল অভিযান এর ফলে আন্তর্জাতিক সহিংসতা তথা কূটনৈতিক উত্তেজনা তীব্র হওয়ার ঝুঁকি থাকে। ইতিহাসে একই ধরনের যুক্তি দেখিয়ে বিদেশে সামরিক অভিযান চালানোর আগে বড় রাজনৈতিক ও আইনি আলোচনার প্রয়োজন পড়ে; বর্তমানে কংগ্রেসের ভূমিকা, আন্তর্জাতিক আইন ও কূটনৈতিক দায়-দায়িত্ব ইত্যাদি নিয়ে নতুন বিতর্ক শুরু হয়েছে।
সাম্প্রতিক সময়ে ট্রাম্পের এই মন্তব্য বিশ্বমঞ্চে নতুন উত্তেজনার সূত্রপাত করেছে: যুক্তরাষ্ট্র–ভেনেজুয়েলার সম্পর্ক, লাতিন আমেরিকার নিরাপত্তা পরিস্থিতি, এবং মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণকে বার্তাস্বরূপ কৌশল হিসেবে ব্যবহার করার নীতি—এসব ইস্যু এখন আলোচনার কেন্দ্রে।
বিডি প্রতিদিন/আশিক