বৃহস্পতিবার, ২২ সেপ্টেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা

বজ্রপাতে প্রাণহানি

দুর্যোগের কারণ নির্ণয়ের উদ্যোগ নিন

মঙ্গলবার সারা দেশে বজ্রপাতে অন্তত ১৬ জন নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে ১৯ জন। নিহতদের মধ্যে টাঙ্গাইলের মধুপুরের এক আদিবাসী পরিবারের তিন সদস্যও রয়েছেন। চলতি বছর বজ্রপাতে একের পর এক মৃত্যুর ঘটনা ঘটছে। অনুমান করা হয় আবহাওয়ার অনভিপ্রেত পরিবর্তন বায়ুমণ্ডলে উষ্ণতা যেমন বাড়াচ্ছে তেমনি বাড়িয়ে চলেছে টর্নেডো, ঝড় ও প্লাবনের আশঙ্কা। বজ্রপাতের ঘটনা বৃদ্ধির পেছনেও উষ্ণতার বিষয়টি অনেকাংশে দায়ী বলে মনে করা হয়। গাছপালা কমে যাওয়ায় দেশের অভ্যন্তরীণ তাপমাত্রা এক থেকে দেড় সেলসিয়াস বেড়েছে। বাড়ছে বাতাসে জলীয়বাষ্পের পরিমাণও। দক্ষিণে বঙ্গোপসাগর থেকে ভেসে আসা আর্দ্র বায়ু আর উত্তরে হিমালয় থেকে আসা শুষ্ক বায়ুর মিলনে সৃষ্টি হচ্ছে বজ্রপাত। বজ্রপাতের ঘটনা সাধারণত মে মাসেই বেশি ঘটে থাকে। এ বছর মে থেকে চলতি সেপ্টেম্বর পর্যন্ত একের পর এক বজ্রপাত ও হতাহতের ঘটনা ঘটছে। চলতি বছরের ১২ ও ১৩ মে দুই দিনে বজ্রপাতে সারা দেশে অন্তত ৫৭ জন মারা যায়। দেশের জানা ইতিহাসে দুই দিনে বজ্রপাতে এত বিপুল মানুষের প্রাণহানির ঘটনা অতীতে কখনো ঘটেনি। আবহাওয়াবিদরা বলছেন, পৃথিবীতে বজ্রপাতে যে সংখ্যক মানুষ প্রাণ হারান তার এক-চতুর্থাংশই বাংলাদেশের। তারপরও বজ্রপাতে ঠিক কী পরিমাণ জীবনহানি ঘটেছে সে সম্পর্কে সঠিক তথ্য-উপাত্ত নেই বললেই চলে। আবহাওয়া অধিদফতরের মতে, গত কয়েক বছর ধরে বজ্রপাতের পরিমাণ বাড়ছে। সাধারণত মে মাসে বজ্রপাতের ঘটনা বেশি ঘটলেও চলতি বছর এ দুর্যোগ কোনো বিশেষ মাসে সীমাবদ্ধ নেই। বিশেষজ্ঞদের মতে, একসময় দেশের বেশিরভাগ গ্রাম এলাকায় বড় গাছ থাকত। তাল, নারিকেল, বটসহ নানা ধরনের বড় গাছ বজ্রপাতের আঘাত নিজের শরীরে নিয়ে নিত। ফলে মানুষের আঘাত পাওয়ার আশঙ্কা কমত। দেশে বড় গাছের সংখ্যা হ্রাস পাওয়ায় বজ্রপাতে প্রাণহানির সংখ্যা বেড়েছে কিনা খতিয়ে দেখা দরকার। মুঠোফোনের ব্যবহারও বজ্রপাত বৃদ্ধির জন্য দায়ী বলে ব্যাপকভাবে মনে করা হয়। বজ্রপাতে মৃত্যুর সংখ্যা আশঙ্কাজনকভাবে বৃদ্ধি নিঃসন্দেহে একটি উদ্বেগজনক ঘটনা। কেন এ দুর্যোগ বাড়ছে তা নির্ণয়ের উদ্যোগ থাকা উচিত। আবহাওয়ায় বিরূপ প্রতিক্রিয়া প্রতিরোধেও থাকতে হবে সতর্কতা।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর