শিরোনাম
শুক্রবার, ২৯ ডিসেম্বর, ২০১৭ ০০:০০ টা

পানি প্রতারণা

কর্তৃপক্ষ নজর দিন

কী পানি কিনে খাচ্ছি আমরা? পানির অপর নাম জীবন। সে পানি নিয়ে চলছে প্রতারণা। ওয়াসা নগরবাসীর জন্য যে পানি সরবরাহ করছে তার মানও প্রশ্নের ঊর্ধ্বে নয়। ওয়াসার পানির পাইপলাইন লিকেজ হয়ে তাতে স্যুয়ারেজ লাইনের ময়লা পানি ঢুকে পড়ার আশঙ্কা থাকায় অনেকেই নিরাপদ ভেবে ব্যবহার করছে জারের পানি। কিন্তু গবেষণায় দেখা গেছে, জারের পানি বিক্রি করে বিভিন্ন পানি বিপণনকারী প্রতিষ্ঠান দুই হাতে টাকা আয় করলেও সে পানিও নিরাপদ নয়। বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের (বিএআরসি) একদল গবেষক বোতলজাত ও জার পানিতে বিদ্যমান খনিজ উপাদানের মাত্রা ও গুণাগুণ নির্ণয়ে গবেষণা করতে গিয়ে যে তথ্য পেয়েছেন তা রীতিমতো ‘ভীতিকর’। জার পানির গবেষণায় ২৫০টি নমুনা সংগ্রহ করেন গবেষকরা। ঢাকার ফার্মগেট, কারওয়ান বাজার, এলিফ্যান্ট রোড, নিউমার্কেট, চকবাজার, সদরঘাট, কেরানীগঞ্জ, যাত্রাবাড়ী, মতিঝিল, বাসাবো, মালিবাগ, রামপুরা, মহাখালী, গুলশান, বনানী, উত্তরা, এয়ারপোর্ট, ধানমন্ডি, মোহাম্মদপুর, মিরপুর, গাবতলী, আমিনবাজার, আশুলিয়া ও সাভার এলাকা থেকে এসব নমুনা সংগ্রহ করা হয়। গবেষণায় দেখা গেছে, সংগ্রহ করা নমুনাগুলোয় টোটাল কলিফর্মের ক্ষেত্রে প্রতি ১০০ মিলিলিটার পানিতে সর্বনিম্ন ও সর্বোচ্চ মাত্রা পাওয়া গেছে যথাক্রমে ১৭ ও ১৬০০ এমপিএন এবং ফেকাল কলিফর্মের ক্ষেত্রে প্রতি ১০০ মিলিলিটার পানিতে সর্বনিম্ন ও সর্বোচ্চ মাত্রা ছিল যথাক্রমে ১১ ও ২৪০ এমপিএন। পানিতে টোটাল কলিফর্ম ও ফেকাল কলিফর্মের পরিমাণ শূন্য থাকার কথা থাকলেও ৯৭ ভাগ জার পানিতে দুটোর উপস্থিতি রয়েছে, যা জনস্বাস্থ্যের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। বাজারে থাকা বিভিন্ন কোম্পানির বোতলজাত পানিতেও বিএসটিআই নির্ধারিত মান না পাওয়ার তথ্য উঠে এসেছে গবেষণার ফলাফলে। গবেষকদের গবেষণায় রাজধানীতে বিভিন্ন কোম্পানির বিপণনকারী ৯৭ ভাগ পানিতে ক্ষতিকর উপাদানের উপস্থিতি জনস্বাস্থ্যের জন্য নিঃসন্দেহে এক হুমকি। বোতলজাত পানিতে বিএসটিআই নির্ধারিত মান না পাওয়ার ঘটনাও উদ্বেজনক। প্রশ্ন হলো, কর্তৃপক্ষের নাকের ডগায় বছরের পর বছর এ ধরনের ক্ষতিকর ও মানহীন পানি বাজারজাত করা হচ্ছে কীভাবে।

যে পানির ওয়াসার সরবরাহকৃত পানির চেয়ে অদৌ মানসম্মত নয়, তা কেন বাড়তি অর্থ ব্যয় করে কিনে ভোক্তারা দিনের পর দিন প্রতারিত হবেন?

এসব নজরদারির কোনো কর্তৃপক্ষই কি দেশে নেই? এই অনাকাঙ্ক্ষিত অবস্থার অবসান হওয়া উচিত।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর