বৃহস্পতিবার, ১৭ মে, ২০১৮ ০০:০০ টা

খুলনার সিটি নির্বাচন

উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি যেন বাস্তবায়ন হয়

খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী তালুকদার আবদুল খালেক বিপুল ভোটের ব্যবধানে জয়ী হয়েছেন। বিএনপির শক্তিমান প্রার্থী নজরুল ইসলাম মঞ্জুকে তিনি প্রায় ৬৮ হাজার ভোটের ব্যবধানে হারিয়েছেন। নির্বাচনে বুথ দখল ও কারচুপির চেষ্টা চলায় তিনটি কেন্দ্রের ভোট স্থগিত করা হয়। ২৮৯ কেন্দ্রের ঘোষিত ২৮৬টির অনানুষ্ঠানিক ফলাফলে নৌকা প্রতীকে তালুকদার আবদুল খালেক পেয়েছেন ১ লাখ ৭৬ হাজার ৯০২ ভোট, নজরুল ইসলাম মঞ্জুর ধানের শীষের ভোট ১ লাখ ৮ হাজার ৯৫৬। তৃতীয় স্থানে আছেন ইসলামী আন্দোলনের হাতপাখা প্রতীকের প্রার্থী মুজাম্মিল হক। তার প্রাপ্ত ভোট ৫ হাজার ৮৫৩। অন্য দুই প্রার্থীর ভোট ছিল ৫০০-এর নিচে। নির্বাচন সামান্য কিছু ব্যতিক্রম বাদে দৃশ্যত শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠিত হয়েছে। নিজেদের বিতর্কের ঊর্ধ্বে রাখতে নির্বাচন কমিশন ছিল তত্পর। খুলনায় ঐতিহ্যগতভাবে আওয়ামী লীগবিরোধী ভোটের সংখ্যা বেশি। ২০০৮ সালের নির্বাচনে সারা দেশে নৌকার জয়জয়কার হলেও খুলনা মহানগরী থেকে ধানের শীষের প্রার্থী নজরুল ইসলাম মঞ্জু জিতেছিলেন বড় ব্যবধানে। গত মেয়র নির্বাচনেও বিএনপির মেয়র প্রার্থী বিপুল ব্যবধানে জয়ী হন। কিন্তু তার আগের মেয়র তালুকদার খালেকের আমলে খুলনায় যে ব্যাপক উন্নয়ন হয় সে ধারাবাহিকতা তিনি বজায় রাখতে পারেননি। যে কারণে খুলনার রাজনীতিতে জনপ্রিয় ব্যক্তিত্ব বলে পরিচিত নগর বিএনপির সভাপতি নজরুল ইসলাম মঞ্জুকে প্রার্থী করে বিএনপি। কিন্তু জাতীয় রাজনীতিকে পাশ কাটিয়ে খুলনার উন্নয়নের রাজনীতি সামনে এনে বাজিমাত করেন তালুকদার আবদুল খালেক। নির্বাচনে বিএনপির জনপ্রিয় একজন কাউন্সিলর সরাসরি তালুকদার খালেকের পক্ষে প্রচারণা চালান। মামলা ও রাজনৈতিক হয়রানিতে বিপর্যস্ত বিএনপি কর্মীদের একাংশ তালুকদার খালেকের পক্ষে নামায় নির্বাচনে তার বিপুল জয় নিশ্চিত হয়। বিএনপি অবশ্য অভিযোগ করেছে ১০০ কেন্দ্রে কারচুপির ঘটনা ঘটেছে। তবে ধানের শীষের প্রার্থী তার নিজের কেন্দ্রেই পরাজিত হয়েছেন নৌকা প্রার্থীর কাছে। তালুকদার খালেক খুলনার উন্নয়নে মঞ্জুসহ সবাইকে নিয়ে কাজ করার আশ্বাস দিয়েছেন। বলেছেন

এ শহর আমাদের সবার। এ শহর ভালো থাকলে আমরা সবাই ভালো থাকব। খুলনার সিটি নির্বাচনে নৌকার জয়ে ক্ষমতাসীন দলের আত্মপ্রসাদের কোনো সুযোগ নেই। স্থানীয় নির্বাচনে উন্নয়ন ইস্যু প্রাধান্য পাবে এমনটিই স্বাভাবিক। জাতীয় নির্বাচন যখন আসন্ন তখন আত্মপ্রসাদে না ভুগে নিজেদের শুধরে নেওয়া ও নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে তারা মনোযোগী হবেন এমনটিই কাঙ্ক্ষিত।

 

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর