সোমবার, ১৯ নভেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা
ইতিহাস

বিদ্রোহাত্মক মনোভাব

কুফার জনগণের বিদ্রোহাত্মক ও বিশ্বাসঘাতক মনোভাব কারবালার হত্যাকা-ের জন্য দায়ী ছিল। তারা উমাইয়া শাসনের অভিশাপ হতে মুক্তিলাভের জন্য ইমাম গোসেইনের সাহায্য প্রার্থনা করল। কারণ হজরত আলীর শাসনামলে তারা নানা প্রকার সুযোগ-সুবিধা লাভ করেছিল। তাই কুফার জনগণ উমাইয়া শাসনকর্তার জুলুম হতে রেহাই পাওয়ার জন্য ইমাম হোসেইনকে নিজেদের স্বার্থে কুফায় যাওয়ার আমন্ত্রণ জানাল এবং সব প্রকার সাহায্যের প্রতিশ্র“তি দিল। কিন্তু সরলমতি ইমাম হোসেইন কপট ও অস্থিরমতি কুফাবাসীর অভিসন্ধি বুঝতে না পেরে তাদের আমন্ত্রণে সাড়া দিলেন এবং কারবালার ঘটনা ত্বরান্বিত করলেন। তিনি কুফায় গমন না করলে হয়তো কারবালার প্রান্তরের এ মর্মান্তিক ঘটনা সংঘটিত হতো না। আমন্ত্রিত ইমাম হোসেইন ও তার পরিবারবর্গের প্রতি কুফাবাসী যে নৃশংস হত্যা ও বর্বরতার পরাকাষ্ঠা প্রদর্শন করল তা ইতিহাসের এক কলঙ্কময় ঘটনা।

ইয়াজিদের শাসনকর্তা ওবায়দুল্লাহ-বিন-জিয়াদের জুলুমে এ সময় কুফাবাসী বিদ্রোহ ঘোষণা করে এবং নিজেদের উদ্ধারের জন্য  হোসেইনকে কুফায় আহ্বান জানায়। ইরাকি চরিত্র সম্পর্কে ওয়াকিফহাল হোসেইনের বন্ধুরা কুফাবাসীদের কথায় বিশ্বাস স্থাপন না করতে তাকে অনুরোধ করলেন। তার সম্পর্কিত ভ্রাতা মুসলিমকে বাস্তব পরিস্থিতি অবগত হওয়ার জন্য কুফায় প্রেরণ করা হলো। তিনি সেখানে পৌঁছলে কুফাবাসী তাকে সাহায্যের প্রতিশ্র“তি দিল এবং মুসলিম হোসেইনকে কুফায় আসতে অনুরোধ করে পত্র লিখলেন। এর কিছু পরে মুসলিম ওবায়দুল্লাহ কর্তৃক নিহত হলেন।

মুসলিমের পত্র পেয়ে হোসেইন তার শুভাকাক্সক্ষীদের কথা উপেক্ষা করে স্বল্পসংখ্যক সৈন্য নিয়ে সপরিবারে কুফায় রওনা হলেন। কুফার মরুপথ অতিক্রম করার পর তিনি ওবায়দুল্লাহর লোক কর্তৃক মুসলিমের হত্যার সংবাদ পেলেন। এতে তিনি বিব্রত হলেন, কিন্তু সফরে বিরত হতে পারলেন না। কারণ মুসলিমের আত্মীয়রা এ হত্যার প্রতিশোধ গ্রহণের জন্য তাকে চাপ দিল। হোসেইনের নিজেরও ধারণা ছিল যারা তার আমন্ত্রণকারী ছিল তারা তার উপস্থিতিকে সাদরে গ্রহণ করবে। কিন্তু এ ধারণা মিথ্যা প্রমাণিত হলো। দুর্দশার মুখে বেদুইনরাও হোসেইনের দল ত্যাগ করল। অনেকের মতে, এ সময় হোসেইনের সঙ্গে মাত্র ৪০টি অশ্ব ও ২০০ ব্যক্তি ছিল। কিছুদূর অগ্রসর হলে তামিম গোত্রের আল-হোর নামক আরব প্রধানের নেতৃত্বে কুফার অশ্বারোহী বাহিনী  হোসেইনের পথরোধ করল।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর