বৃহস্পতিবার, ২০ জুন, ২০১৯ ০০:০০ টা

খাদ্যে কেমিক্যাল মিশ্রণ

অপরাধীদের বিরুদ্ধে কঠোর হোন

খাদ্যপণ্যে ভেজাল ও ক্ষতিকর কেমিক্যাল মেশানো কোনো সভ্য দেশে কল্পনা করাও কঠিন। তবে আমাদের মতো দেশে এটি যে নিত্যদিনের ঘটনা তা এক প্রতিষ্ঠিত সত্য। আশার কথা, এ বিষয়ে উচ্চ আদালতও তাদের কঠোর মনোভাবের কথা জানিয়েছে। আমসহ মৌসুমি ফলে ক্ষতিকর কেমিক্যাল ব্যবহারকারী ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে বিশেষ ক্ষমতা আইনে ব্যবস্থা নেওয়ার তাগিদ দেওয়া হয়েছে হাই কোর্টের পক্ষ থেকে। মঙ্গলবার এ-সংক্রান্ত রিটের শুনানিতে বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি কে এম কামরুল কাদেরের সমন্বয়ে গঠিত হাই কোর্ট বেঞ্চ বলেছে, দেশে খাদ্যপণ্যে ভেজাল ও ক্ষতিকর কেমিক্যালের ব্যবহার বাড়ছে। এটা এমন পর্যায়ে গিয়ে পৌঁছেছে যে, এ দেশে এখন বেঁচে থাকাটাই দুরূহ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ ধরনের কেমিক্যাল ব্যবহার অপরাধ জেনেও ব্যবসায়ীরা তা করছেন। এতে জনসাধারণ নানা জটিল রোগে ভুগছে। তাই ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে রক্ষা করতেই এদের বিরুদ্ধে বিশেষ ক্ষমতা আইনে ব্যবস্থা নিতে হবে। এ ক্ষেত্রে নমনীয়তা দেখানোর কোনো সুযোগ নেই। এর আগে আমসহ মৌসুমি ফলে ক্ষতিকর কেমিক্যাল ও ফরমালিনের ব্যবহার রোধে বিএসটিআইর নেওয়া পদক্ষেপ আদালতে তুলে ধরা হয় তাদের আইনজীবীর মাধ্যমে। এ পর্যায়ে আদালত বলে, বিএসটিআই যদি সঠিকভাবে কাজ করত তাহলে পরিস্থিতি এ পর্যায়ে যেত না। একদিন অভিযান পরিচালনা করে আদালতে প্রতিবেদন দিলে সেটি হবে আইওয়াশ। পেপারওয়ার্ক করলে চলবে না, অভিযান দৃশ্যমান হতে হবে। আদালত ক্ষতিকর কেমিক্যাল ব্যবহারকারীদের বিরুদ্ধে নিয়মিত অভিযান চালানোর পাশাপাশি কেমিক্যাল শনাক্তকরণের যন্ত্রপাতি সংগ্রহেরও তাগিদ দেয়। বলে, দেশের জনগণকে বাঁচাতে এটি করা দরকার। যারা খাদ্যপণ্যে ভেজাল দেয় কিংবা কেমিক্যাল মিশিয়ে মানুষের জীবন হুমকির দিকে ঠেলে দেয় তারা গণশত্রু। তাদের বিরুদ্ধে বিশেষ ক্ষমতা আইনের প্রয়োগই যথার্থ। শুধু আইনের প্রয়োগ নয়, নিজেদের সভ্যসমাজের অংশ হিসেবে পরিগণিত করার স্বার্থে খাদ্যপণ্যে ভেজাল ও কেমিক্যাল মেশানোর বিরুদ্ধে গণসচেতনতাও গড়ে তুলতে হবে। ভেজালকারীদের বিরুদ্ধে জাগিয়ে তুলতে হবে গণসচেতনতা। এ ব্যাপারে সমাজের সর্বস্তরের মানুষকে একাট্টা হতে হবে। অনিরাপদ খাদ্য এক জাতীয় অভিশাপের নাম। এ অভিশাপ থেকে রক্ষা পেতে হলে গণপ্রতিরোধ গড়ে তোলাও জরুরি।

সর্বশেষ খবর