শুক্রবার, ২১ জুন, ২০১৯ ০০:০০ টা

স্বাস্থ্যবীমার চিন্তাভাবনা

মধ্যবিত্তের জন্য স্বস্তি বয়ে আনবে

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতীয় সংসদের প্রশ্নোত্তর পর্বে বিরোধী দলের সদস্য রুস্তম আলী ফরাজীর প্রশ্নের জবাবে বলেছেন, জনগণের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে সরকারের স্বাস্থ্যবীমা চালুর পরিকল্পনা রয়েছে। এ পরিকল্পনার অংশ হিসেবে টাঙ্গাইলের মধুপুর, ঘাটাইল ও কালিহাতীতে ইতিমধ্যে পরীক্ষামূলক স্বাস্থ্যবীমা কার্যক্রম চালু করা হয়েছে। সর্বজনীন স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার জন্য বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার হেলথকেয়ার ফিন্যান্সিং স্ট্র্যাটেজি ২০১২-২০৩২ প্রণয়ন করেছে। প্রণীত স্ট্র্যাটেজির অধীন সর্বজনীন স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতকরণে প্রাথমিকভাবে দরিদ্র জনগোষ্ঠীকে বিনামূল্যে স্বাস্থ্যসেবা প্রদানের লক্ষ্যে স্বাস্থ্য সুরক্ষা কর্মসূচি (এসএসকে) শীর্ষক পাইলট কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে। স্বাস্থ্যবীমা চালুর বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী সংসদে যে বক্তব্য দিয়েছেন তা আশাজাগানিয়া ঘটনা। সবারই জানা, চিকিৎসা মানুষের মৌলিক অধিকারের একটি। দেশের স্বাধিকার আন্দোলনেও এ অধিকার পূরণকে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছিল। ১৯৭০ সালে বঙ্গবন্ধুর নির্বাচনী ইশতেহারেও এ বিষয়টি স্থান পায়। স্বাধীনতার পর ধ্বংসস্তূপের মধ্য দিয়ে যখন বাংলাদেশের পথচলা শুরু তখনো স্বাস্থ্য খাত এগিয়ে নেওয়ার চেষ্টা চলেছে। সন্দেহ নেই, উন্নয়নশীল দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশেই এ খাতটি সবচেয়ে প্রাধান্য পেয়েছে। গরিব দেশের বাজেটের এক বড় অংশ ব্যয় করা হয়েছে স্বাস্থ্য খাতে। এর সুফলও অর্জিত হয়েছে নানাভাবে। বাংলাদেশের মানুষের গড় আয়ু বেড়েছে সন্তোষজনকভাবে। প্রসূতিমৃত্যুর হার কমিয়ে আনার ক্ষেত্রে অর্জিত হয়েছে তাৎপর্যপূর্ণ সাফল্য। স্বাস্থ্য পরিচর্যায় বাংলাদেশের নানা উদ্যোগ বহির্বিশ্বেও প্রশংসা অর্জন করেছে। স্বাস্থ্যবীমা চালু হলে তা লাখ লাখ মানুষের সুচিকিৎসা নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে অবদান রাখবে। বিশেষ করে মধ্যবিত্ত ও নিম্নমধ্যবিত্তের জন্য এটি আশীর্বাদ বলে বিবেচিত হবে। বাংলাদেশ স্বাস্থ্যসেবার ক্ষেত্রে গত চার যুগে অনেক এগিয়ে গেলেও চিকিৎসা খাতে ব্যয়ের সিংহভাগই যায় ব্যক্তির পকেট থেকে। ফলে চিকিৎসা ব্যয় মেটানো বহু ক্ষেত্রে মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্তের লোকদের জন্য বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে। স্বাস্থ্যবীমা এই বোঝা থেকে তাদের কিছুটা হলেও রেহাই দিলে তা হবে এক বিরাট অর্জন।

সর্বশেষ খবর