শনিবার, ২৯ জুন, ২০১৯ ০০:০০ টা

বিদেশে অর্থ পাচার

পাচারকারীদের চিহ্নিত করা হোক

সুইস ব্যাংকে বাংলাদেশিদের ৫ হাজার ৩৪৩ কোটি টাকা জমা রয়েছে। এর মধ্যে গত এক বছরে জমা হয়েছে ১ হাজার ২৭৪ কোটি টাকা। সুইস ব্যাংককে দুনিয়ার সবচেয়ে নিরাপদ ব্যাংক বলে ভাবা হয়। গ্রাহকের পরিচয়সহ সব তথ্যও গোপন রাখে তারা। যে কারণে দুনিয়াজুড়ে অর্থকড়ির মালিকদের অন্যতম পছন্দ সুইস ব্যাংক। কালো টাকার মালিকদের মাঝে সুইস ব্যাংক হলো সঞ্চয়ের সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য স্থান। সুইস ন্যাশনাল ব্যাংকের প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, সে দেশের ব্যাংকে ২০১৮ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত বাংলাদেশিদের আমানত দাঁড়িয়েছে ৬১ কোটি ৭৭ লাখ সুইস ফ্রাঁ। বাংলাদেশি মুদ্রায় যার পরিমাণ প্রায় ৫ হাজার ৩৪৩ কোটি টাকা। ঠিক এক বছর আগে ২০১৭-এর ডিসেম্বরে বাংলাদেশিদের অর্থ জমানোর পরিমাণ ছিল ৪৮ কোটি ১৩ লাখ ফ্রাঁ; যা বাংলাদেশি মুদ্রায় ৪ হাজার ৫৩ কোটি টাকা। অর্থাৎ মাত্র এক বছরে সুইস ব্যাংকে বাংলাদেশিদের আমানত বেড়েছে ১ হাজার ২৭৪ কোটি টাকা। ২০১৭ সালে বাংলাদেশিদের অর্থ জমানোর পরিমাণ ছিল ৪ হাজার ৬৯ কোটি টাকা, ২০১৬-তে এর পরিমাণ ছিল ৫ হাজার ৫৬৬ কোটি, ২০১৫-তে ৪ হাজার ৪১৭ কোটি, ২০১৪-তে ৪ হাজার ৫৮ কোটি, ২০১৩-তে ২ হাজার ৯৮১ কোটি। অর্থাৎ মাঝে ২০১৭ সাল ছাড়া প্রতি বছরই সুইস ব্যাংকে বাংলাদেশিদের অর্থ জমানোর পরিমাণ বেড়েছে। বাংলাদেশ থেকে বিভিন্ন পথে অর্থ পাচার করে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে নিয়ে যাওয়া হয়; যার একটি বড় অংশ সুইস ব্যাংকে জমা হয়। ইউরোপের দেশগুলোয় ওভার ইনভয়েসের মাধ্যমে অর্থ পাচার হয়। সম্প্রতি একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের মাধ্যমে শীর্ষ এক ব্যবসায়ী এ পদ্ধতিতে প্রায় ৩ হাজার কোটি টাকা পাচার করেছেন। বাংলাদেশ থেকে বড় ব্যবসায়ী, আমদানি ও রপ্তানি বাণিজ্যের সঙ্গে জড়িতরা, ব্যাংকিং ও শুল্ক দফতরের কিছু লোকও পাচারের সঙ্গে জড়িত বলে সন্দেহ করা হয়। মাত্র এক বছরে সুইস ব্যাংকে বাংলাদেশিদের ১ হাজার ২৭৪ কোটি টাকা জমা পড়ায় এ অর্থের উৎস নিয়ে স্বভাবতই বোদ্ধাজনদের মধ্যে প্রশ্নের সৃষ্টি হয়েছে। এ টাকা বাংলাদেশ থেকে পাচারকৃত না প্রবাসী বাংলাদেশিদের সঞ্চিত অর্থ, তা নিয়েও চলছে জল্পনা-কল্পনা। আমরা আশা করব এ অর্থের উৎস সম্পর্কে সরকার জানার চেষ্টা করবে। বিশ্বের অন্যান্য দেশের ব্যাংকে বাংলাদেশি নাগরিকদের সঞ্চিত অর্থ এবং তার উৎস সম্পর্ক জানার চেষ্টা করা হবে- এমনটিও প্রত্যাশিত।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর