শুক্রবার, ১২ জুলাই, ২০১৯ ০০:০০ টা

জনসংখ্যা সমস্যা

জন্মনিয়ন্ত্রণে আরও সক্রিয়তা কাম্য

বাংলাদেশের জনসংখ্যা এখন ১৬ কোটি ৮১ লাখ। মাত্র ৫০ বছরে এ দেশের জনসংখ্যা বেড়েছে ১৪০ শতাংশের বেশি। এই সময়ে দেশের বিপুলসংখ্যক মানুষ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে অভিবাসী হয়েছে; সে হিসাব আমলে নিলে গত পাঁচ বছরে বাংলাদেশের জনসংখ্যা বেড়েছে অন্ততপক্ষে ১৫০ শতাংশ। জাতিসংঘের জনসংখ্যা তহবিলের স্টেট অব ওয়ার্ল্ড পপুলেশন, ২০১৯-এর তথ্যানুসারে ১৯৬৯ সালে দেশের জনসংখ্যা ছিল ৬৩.৪ মিলিয়ন, ’৯৪ সালে তা বেড়ে হয় ১১৬.২ মিলিয়ন এবং চলতি বছরে তা হয় ১৬৮.১ মিলিয়ন। এ ক্ষেত্রে প্রথম ২৫ বছরে আর পরের ২৫ বছরে জনসংখ্যা বেড়েছে সমান ৫২ মিলিয়ন করে। ১৯৬৯ সালে দেশের মানুষের গড় আয়ু ছিল ৪৮, ’৯৪ সালে যা হয় ৬১ আর চলতি বছর তা হয়েছে ৭৩। এ হিসাব অনুযায়ী আগের ২৫ বছর গড় আয়ু বেড়েছিল ১৩ বছর, গত ২৫ বছর বেড়েছে ১২ বছর। জন্মহার ’৬৯ সালে ছিল ৬.৯, যা ’৯৪ সালে হয় ৩.৮ এবং বর্তমানে তা ২-এ এসে দাঁড়িয়েছে। সেখানেও আগের ২৫ বছরের তুলনায় কিছুটা কম। এমনকি জন্মনিরোধক আধুনিক পদ্ধতি ব্যবহার ১৯৬৯-৯৪ পর্যন্ত বেড়েছিল ৩৪ শতাংশ, অন্যদিকে তা চলতি বছর পর্যন্ত বেড়েছে ২০ শতাংশ। এ খাতের বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সরকার ও দাতা সংস্থা যে হারে গত ২৫ বছরে পরিবার পরিকল্পনা বিভাগকে পৃষ্ঠপোষকতা দিয়েছে, এ খাতে বিনিয়োগ করেছে; সে হারে কাজের গতি বাড়াতে পারেনি। ফলে আগের ২৫ বছরের তুলনায় পরের ২৫ বছরের অগ্রগতি কম। গত ৫০ বছরে এশীয় দেশগুলোর মধ্যে জাপানের জনসংখ্যা বাড়েনি বললেই চলে। ক্ষুদ্র আয়তনের বাংলাদেশ এখন দুনিয়ার অন্যতম ঘনবসতির দেশ। স্বাধীনতার পর গত চার যুগে বাড়তি জনসংখ্যার চাহিদা মেটাতে ঘরবাড়ি, রাস্তাঘাট, স্থাপনা বিনির্মাণে চাষযোগ্য জমির পরিমাণ প্রায় ৪০ শতাংশ কমেছে। উন্নত চাষাবাদের কারণে এই সময়ে খাদ্য উৎপাদন কয়েক গুণ বাড়লেও জনসংখ্যা বর্তমান হারে বাড়লে ৫০ বছর পর দেশে চাষাবাদের জমি আশঙ্কাজনক হারে হ্রাস পাবে। হয়তো দেখা দেবে খাদ্যাভাব। সে বিপদ না চাইলে জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণে আরও সক্রিয় হতে হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর