সোমবার, ১৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২০ ০০:০০ টা

কর্ণফুলীর দখল দূষণ

জনসচেতনতা গড়ে তুলতে হবে

চট্টগ্রাম মহানগরী ও কর্ণফুলী একে অপরের অনুষঙ্গ। কর্ণফুলীর ভালোমন্দের সঙ্গে দেশের অর্থনীতির প্রাণকেন্দ্র বাণিজ্যিক রাজধানী চট্টগ্রামের ভালোমন্দ অনেকাংশে জড়িত। দেশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ নদী লুসাই দুহিতা কর্ণফুলী ভালো নেই দখল দূষণের কারণে। বাংলাদেশ প্রতিদিনের প্রতিবেদনে চট্টলাবাসীর প্রিয় নদীর বেহাল অবস্থার চিত্র তুলে ধরা হয়েছে। বলা হয়েছে কীভাবে দূষণের শিকার হচ্ছে অর্ধকোটি মানুষের ফুসফুসের ভূমিকা পালনকারী এই নদী। কর্ণফুলী নদীর অন্যতম শাখা চাক্তাই খাল। এ খাল দিয়ে কালো কুচকুচে পানি সরাসরি গিয়ে পড়ছে নদীতে। অভিন্ন দৃশ্য এ নদীর অন্যতম শাখা রাজাখালের। নগরের শিল্প, বাণিজ্যিক ও আবাসিকের প্রতিদিন গড়ে প্রায় পাঁচ হাজার টন বর্জ্য পড়ছে বন্দরের প্রাণখ্যাত কর্ণফুলী নদীতে। অপরিকল্পিত নগরায়ণ ও শিল্পায়নসহ নানা কারণে দূষিত এবং সংকোচন হচ্ছে কর্ণফুলী। ফলে অস্তিত্ব সংকট তৈরি হচ্ছে নদীটির। সঙ্গে জলজ জীব, নাগরিক স্বাস্থ্য, সামাজিক জনজীবন ও দেশের অর্থনীতিতে এর বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করছে। কর্ণফুলী নদী রক্ষায় প্রণীত ১০ বছর মেয়াদি মহাপরিকল্পনায়ও এসব বিষয় উল্লেখ করা হয়। ২৭৫ কিলোমিটার দৈর্ঘ্য ও ৬৬৭ মিটার গড় প্রস্থের কর্ণফুলী নদীর এখন মাত্রাতিরিক্ত দখল ও দূষণে ত্রাহি অবস্থা। একই অবস্থা রাজাখালী খালেরও। নদীতে গিয়ে পড়ছে কালো রঙের তেলের মতো পানি। দুই খালের মুখ দিয়ে সরাসরি কর্ণফুলী নদীতে গিয়ে পড়ছে পলিথিন, প্লাস্টিক পণ্য এবং নানা অপচনশীল দ্রব্য।  দখলের কালো হাত কর্ণফুলীর অস্তিত্ব বিপন্ন করে তুলছে। অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে দৃশ্যত কর্তৃপক্ষের সদিচ্ছার অভাব নেই। বলা হচ্ছে, আইনি জটিলতা দখলদার উচ্ছেদে কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারছে না। অনেকের ধারণা সদিচ্ছার অভাবও দখলদারদের অস্তিত্বকে টিকিয়ে রাখছে। শুধু কর্ণফুলী নয়, বিপন্ন হচ্ছে চট্টগ্রাম মহানগরীও। বন্দর নগরীর পরিবেশে অপপ্রভাব রাখছে। কর্ণফুলীর দখল দূষণের অবসানে কর্তৃপক্ষের আন্তরিকতা নিয়ে যে সংশয় রয়েছে তার অবসান ঘটাতে হবে। জনপ্রতিনিধি যারা তাদেরও চট্টগ্রামের মাটি ও মানুষের প্রতি অঙ্গীকারবদ্ধ হতে হবে। জনসচেতনতা গড়ে তোলার বিষয়টিও সমভাবে গুরুত্বের দাবিদার। বিশেষ করে ছাত্র শিক্ষক সংস্কৃতি কর্মীসহ বুদ্ধিবৃত্তির সঙ্গে যারা জড়িত তাদের এ ব্যাপারে সক্রিয় হতে হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর