রবিবার, ১ মার্চ, ২০২০ ০০:০০ টা

নকল-ভেজাল প্রসাধনী

আইন প্রয়োগে কঠোর হতে হবে

প্রসাধনীর ব্যবহার শুরু হয় মানবসভ্যতার বিকাশের পর থেকে। নিজেকে অন্যের কাছে সুন্দররূপে তুলে ধরতে মানুষের গরজের অভাব নেই। রমণীকুলের সঙ্গে প্রসাধনের সম্পর্ক প্রায় অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত। আর এ কারণেই দুনিয়াজুড়ে গড়ে উঠেছে হাজার হাজার কোটি টাকার প্রসাধন বাণিজ্য। আমাদের দেশেও প্রসাধন বাণিজ্যের প্রসার খুব একটা কম নয়। পাশাপাশি প্রসাধনের নামে প্রতারণার ঘটনাও আকাশছোঁয়া। দেশে যদু-মধুরাও প্রসাধনসামগ্রী বাজারজাত করছে গলা ভরা বুলির ওপর ভরসা করে। তাদের পাশাপাশি প্রতারণা ব্যবসায় নেমেছে নির্ভেজাল প্রতারকরা। যারা নামিদামি বিদেশি ব্র্যান্ড হুবহু নকল করে বাজারজাত করছে। টিভি চ্যানেল নিউজ টোয়েন্টিফোরে পুরান ঢাকায় ঘরে বসে ক্ষতিকর রাসায়নিক দিয়ে প্রসাধন বানানোর চিত্র তুলে ধরা হয়েছে। নকলবাজরা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে ধরা পড়লেও বন্ধ হচ্ছে না নকল প্রসাধনী তৈরির ব্যবসা। কামরাঙ্গীর চর, কেরানীগঞ্জ ও পুরান ঢাকায় গড়ে উঠেছে নকল প্রসাধনীর অনেক কারখানা। এতে মেশানো হচ্ছে ভয়াবহ কেমিক্যাল। চোখ জুড়ানো নানা রঙের সঙ্গে কেমিক্যাল হাতে মিশিয়ে কথিত প্রসাধনী বোতলজাত করছেন শ্রমিকরা। যারা রূপচর্চায় ত্বকের যত্ন নিতে নানা ধরনের ফেসিয়াল, স্কার্ব কিংবা শ্যাম্পু ব্যবহার করেন, তারা শুনলে আতঙ্কিত হবেন- নকল ওইসব প্রসাধনে মেশানো হয় হাইড্রোজেন পারঅক্সাইড জাতীয় বিভিন্ন কেমিক্যাল। এরপর ওইসব নকল প্রসাধনীতে বিদেশি ব্র্যান্ডের হুবহু মোড়কে যুক্ত করতেই তা হয়ে যায় বিশ্বস্ত নামিদামি কোম্পানির ফেসিয়াল ও স্কার্ব। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রসাধনী নিয়ে অসাধু চক্রের এমন জালিয়াতিতে ভয়াবহ রোগে আক্রান্ত হতে পারেন ভোক্তারা। নকল প্রসাধনীতে কঠিন ধাতু থাকলে স্কিন ক্যান্সারসহ নানা জটিল রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি থাকে। প্রসাধনী প্রতারণা থেকে ভোক্তাদের বাঁচাতে সমন্বিত অভিযান পরিচালনার পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। মানুষ প্রসাধন ব্যবহার করে ত্বক ও চুল সুন্দর করার জন্য। কিন্তু ক্ষতিকর উপাদান দিয়ে তৈরি নকল প্রসাধন নিজেকে সুন্দর করে তোলার বদলে স্বাস্থ্যঝুঁকির মধ্যে ঠেলে দেয় ব্যবহারকারীদের। দেশে নকল-ভেজালের বিরুদ্ধে কঠোর আইন থাকলেও প্রয়োগকারীদের গাফিলতিতে এই পাপ ব্যবসা রোধ করা সম্ভব হচ্ছে না। জনস্বাস্থ্যের স্বার্থে নকলকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। জালিয়াতদের দমনে নিশ্চিত করা দরকার আইন প্রয়োগকারীদের সততা।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর