কোনো ধরনের গুজব নয়, নিজে টিকা নিন, অন্যকে টিকা নিতে উৎসাহ দিন- এ আহ্বানে দেশে করোনাভাইরাস টিকাদান কর্মসূচি এগিয়ে যাচ্ছে। ক্রমেই বাড়ছে টিকাগ্রহীতাদের আগ্রহ। শুরুর দিকে একটা ভয় কাজ করলেও এখন স্বাচ্ছন্দ্যে টিকা নিচ্ছেন অনেকেই। তবে টিকা নেওয়া ও নিবন্ধনে পিছিয়ে রয়েছে নারীরা। পুরুষের তুলনায় নারী টিকাগ্রহীতার সংখ্যা প্রায় অর্ধেক। এমন তথ্য পাওয়া গেছে বাংলাদেশ প্রতিদিনের এক প্রতিবেদনে। আসলে টিকা গ্রহণকারীদের নিবন্ধনভুক্ত হওয়ার জন্য একটি সফটওয়্যার অ্যাপ্লিকেশন (অ্যাপ) তৈরি করা হয়েছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ থেকে বলা হয়েছে, টিকা নিতে হলে ওই অ্যাপের সাহায্যে অনলাইনে নিবন্ধন করতে হবে। নাগরিক মহলে এ অ্যাপের কার্যকারিতার বিষয়ে প্রশ্ন উঠেছে। কেউ কেউ বলেছেন, বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক বাস্তবতায় অনেক মানুষের পক্ষে এ অ্যাপ ব্যবহার করে টিকার জন্য নিবন্ধিত হওয়া সম্ভব নয়। আমাদেরও মনে হয়, গ্রামাঞ্চলে শিক্ষাবঞ্চিত ও দরিদ্র জনগোষ্ঠীর ক্ষেত্রে অ্যাপ কার্যকর হবে না। তবে সরকার প্রথমেই টিকা দেওয়ার জন্য অগ্রাধিকার ভিত্তিতে যে ১৫টি জনগোষ্ঠীর তালিকা তৈরি করেছে, তাদের সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশ পেশাজীবী হওয়ায় তাদের ক্ষেত্রে অ্যাপটি কার্যকর হতে পারে। অবশ্য এভাবে সীমিতসংখ্যক মানুষকে টিকা দেওয়া যাবে। পর্যায়ক্রমে ১৭ কোটি মানুষের টিকা প্রয়োগের কাজ সুসম্পন্ন করতে হলে যে বিশাল তালিকা তৈরি করতে হবে, তার প্রধান ভিত্তি হওয়া উচিত জাতীয় পরিচয়পত্র। স্বাস্থ্য অধিদফতর বলছে, টিকা কার্যক্রমে নারীরা এগিয়ে আসছে না। গরিব, অসচ্ছল, ভাসমান মানুষ এখনো টিকা নিচ্ছে না। এদের কাছে টিকা পৌঁছানোর ব্যবস্থা করতে হবে। জানা গেছে, নিবন্ধিত পুরুষের ৬০ শতাংশের বেশি টিকা নিলেও নিবন্ধিত নারীদের মধ্যে টিকা নিয়েছেন ৫০ শতাংশের কম। নিবন্ধনেও পুরুষের তুলনায় পিছিয়ে নারীরা। নারীদের জন্য বিশেষ প্রচারের ব্যবস্থা ও সচেতনতা বাড়াতে হবে।