সৌদি আরবের পর দেশের বৃহত্তম শ্রমবাজার বলে পরিচিত মালয়েশিয়া। নানা কারণে দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ রয়েছে এ শ্রমবাজার। বাংলাদেশের জনশক্তি রপ্তানিকারকদের অসততা এবং আমলাদের অর্বাচীন আচরণে মালয়েশিয়া বাংলাদেশ থেকে শ্রমিক নেওয়ার ব্যাপারে নেতিবাচক সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়। যদিও রাজনৈতিক ক্ষেত্রে প্রথম থেকেই বোঝাপড়া বেশ ভালো এবং বহু ইস্যুতে বন্ধুপ্রতিম দুই দেশের ভূমিকা অভিন্ন। মালয়েশিয়ায় শ্রমবাজার বন্ধ থাকায় বাংলাদেশি শ্রমিকদের কর্মসংস্থানের সুযোগ সংকুচিত হয়। বিপুল বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের সুযোগ থেকেও বঞ্চিত হয় বাংলাদেশ। আশার কথা ১৯ মে মালয়েশিয়ার মানবসম্পদ মন্ত্রী বাংলাদেশের প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী ইমরান আহমদকে চিঠি দিয়েছেন। কর্মী নিয়োগসংক্রান্ত দুই দেশের সমঝোতা স্মারকবিষয়ক চিঠিতে মালয়েশিয়ার মন্ত্রী উল্লেখ করেছেন, তাদের মন্ত্রিসভা ৭ এপ্রিল সোর্স কান্ট্রি থেকে প্লান্টেশন খাতে ৩২ হাজার বিদেশি কর্মী নিয়োগের বিষয়ে বিশেষ অনুমোদন দিয়েছে। স্মর্তব্য, কর্মীদের ক্রমাগত প্রতারিত হওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম শ্রমবাজার মালয়েশিয়ায় ২০০৯ সালে প্রথমবারের মতো কর্মী নেওয়া বন্ধ হয়। এরপর দেরদরবার করে ২০১২ সালে জিটুজি পদ্ধতিতে সরকারি ব্যবস্থাপনায় কর্মী নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়। তবে ধীরগতির কারণে মালয়েশিয়া এ প্রক্রিয়ায় বিক্রুটিং এজেন্সিগুলোকে যুক্ত করে। এ পদ্ধতিতে ২ লাখ কর্মী মালয়েশিয়ায় যায়। পরে জিটুজি প্লাস পদ্ধতিতে অর্থ আত্মসাতের কথা বলে লোক নেওয়া বন্ধ করে মালয়েশিয়া সরকার এবং বিষয়টির তদন্ত শুরু করে। তদন্তে অভিযোগের সত্যতা প্রমাণিত না হওয়ায় আবারও বাংলাদেশ থেকে কর্মী নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় মালয়েশিয়া। এ বিষয়ে অনুষ্ঠিত দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে রিক্রুটিং এজেন্সির পরিধি বাড়ানোর প্রস্তাব দেন বাংলাদেশি আমলারা। ফলে মালয়েশিয়ার শ্রমবাজারের রুদ্ধদ্বার খোলা অনিশ্চিত হয়ে ওঠে। আমরা আশা করব, মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার উন্মুক্ত হওয়ায় যে সুযোগ এসেছে তা যথাযথভাবে কাজে লাগানো হবে। আমলাদের বদলে রাজনৈতিক সিদ্ধান্তে বিষয়টির সুরাহা হলে উত্তম হবে।