মঙ্গলবার, ২২ জুন, ২০২১ ০০:০০ টা

সামাজিক অপরাধ

লাগাম টেনে ধরতে হবে

পারিবারিক ও সামাজিক অপরাধ ভয়াবহভাবে বাড়ছে। ভেঙে পড়ছে পারিবারিক মূল্যবোধ। সন্তানের কাছে এখন নিরাপদ নন বাবা-মা। বাবা-মায়ের কাছেও বিঘ্নিত হচ্ছে সন্তানের নিরাপত্তা। ভাইয়ের কাছে বোন কিংবা বোনের কাছে ভাইও নিরাপদ নয়। মানবাধিকার সংগঠন আইন ও সালিশ কেন্দ্রের পরিসংখ্যান অনুযায়ী চলতি বছরের শুরু থেকে ৩০ মে পর্যন্ত সারা দেশে ধর্ষণ ঘটেছে ৫০২টি। এর মধ্যে গ্যাং রেপ ৯৯টি। ধর্ষণের পর হত্যা ২২টি এবং ধর্ষণচেষ্টা ১০৪টি। স্বামীর হাতে স্ত্রীর মৃত্যু ৯৫টি। স্বামীর পরিবারের দ্বারা হত্যা ২৯টি। স্বামী কর্তৃক নির্যাতন ২৩টি এবং স্বামীর পরিবারের সদস্যদের দ্বারা নির্যাতন ৬টি। পারিবারিক অশান্তির জন্য আত্মহত্যা ৫৬টি। শ্লীলতাহানির শিকার হয়েছেন ৫২ নারী। বিশেষজ্ঞদের মতে অতিমাত্রায় দুশ্চিন্তা, মানসিক চাপ, আস্থার অভাব, অবিশ্বাস থেকেই মানসিক সমস্যার সৃষ্টি হয়। ইন্টারনেটের অযাচিত ব্যবহার এ ক্ষেত্রে বিরূপ ভূমিকা পালন করছে। শিশুদের ইন্টারনেট ব্যবহারের ক্ষেত্রে অভিভাবকদের আরও সতর্ক হওয়া উচিত। একই সঙ্গে কর্তৃপক্ষের উচিত হবে ধর্মীয় ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকেন্দ্রিক সচেতনতামূলক এবং নৈতিক শিক্ষার ওপর প্রশিক্ষণের উদ্যোগ নেওয়া। পারিবারিক বা দাম্পত্য কলহ সাম্প্রতিক সময়ে আগ্রাসী রূপ ধারণ করেছে। অতিসম্প্রতি রাজধানীর কদমতলীতে বাবা-মা ও বোনকে হত্যা করে নিজেই ৯৯৯ নম্বরে ফোন করে পুলিশকে জানিয়েছেন এক গৃহবধূ। হুমকি দিয়ে বলেছেন, পুলিশ দ্রুত এসে তাকে না ধরলে তিনি তার স্বামী ও সন্তানকেও খুন করবেন। খুবই পরিকল্পিত এবং সচেতনভাবে ঘটানো হয়েছে ওই হত্যাকাÐ। গৃহবধূ তার ছোট বোনকে নিয়ে স্বামীর পরকীয়া মেনে নিতে পারেননি। এ ব্যাপারে বাবা-মার কাছে  অভিযোগ করেও প্রতিকার না পাওয়ায় মনে যে ক্ষোভ সৃষ্টি হয় তার পরিণতিতে ঘটে তিনজনের হত্যাকাÐ। রাজধানীতে সাম্প্রতিক সময়ে স্ত্রীর হাতে স্বামী, স্বামীর হাতে স্ত্রীসহ আরও অনেক হত্যাকাÐ ঘটেছে পারিবারিক কলহ ও পরকীয়াকে কেন্দ্র করে। পারিবারিক ও সামাজিক বন্ধনে ফাটল ধরাচ্ছে এ ধরনের অপরাধ। যার লাগাম টেনে ধরতে হবে পারিবারিক, সামাজিক ও রাষ্ট্রীয়ভাবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর