মাদকের থাবা ভয়াবহভাবে বিস্তৃত হচ্ছে। দেশের যুবসমাজের অস্তিত্বের জন্যও তা সাক্ষাৎ হুমকি হয়ে দাঁড়াচ্ছে। প্রচলিত প্রবচন অনুযায়ী ভূত তাড়াতে সরিষার প্রয়োজন। কিন্তু সেই সরিষার ভূতের আসর থাকলে ভূত তাড়ানোর আশা অবান্তর হয়ে দাঁড়ায়। মাদকের থাবা থেকে দেশের যুবসমাজ ও জাতিকে সুরক্ষা দিতে সরকার ইতিমধ্যে সরকারি চাকরিতে ঢোকার আগে ডোপ টেস্টের বাধ্যবাধকতা আরোপ করছে। সরকারি চাকরিজীবীরা যাতে কোনোভাবে মাদকের থাবায় পা না দেন তা নিশ্চিত করতে প্রতি বছর একবার করে তাদের ডোপ টেস্টের আওতায় আনার কথাও বলেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। ডোপ টেস্টে যারা পজিটিভ হবে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ বিষয়ে অনুসৃত হবে জিরো টলারেন্স নীতি। মঙ্গলবার মন্ত্রিপরিষদ সচিবের মাধ্যমে আহুত বৈঠকে সামরিক বাহিনীর প্রতিনিধিসহ সব বাহিনীর প্রধান উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকে কীভাবে মাদক নিয়ন্ত্রণ করা যায় এর উৎস কী এবং ভুক্তভোগী কারা সে বিষয়ে বিস্তৃত আলোচনা হয়। মাদক পরিবহনে কুরিয়ার সার্ভিসের সংশ্লিষ্টতা নিয়েও আলোচনা হয়েছে বৈঠকে। কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে মাদক পরিবহন বন্ধে ডাক বিভাগকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। মাদক নিয়ন্ত্রণে সরকারের সব অংশকে সক্রিয় করার উদ্যোগ প্রশংসার দাবিদার। বিশেষ করে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ডোপ টেস্ট তাদের মধ্যে মাদকের থাবা ঠেকাতে ভূমিকা রাখবে। মাদক নিয়ন্ত্রণে সরকারের সদিচ্ছা সম্পর্কে সংশয়ের কোনো সুযোগ নেই। বর্তমান সরকার মাদক পাচার ও ব্যবসার জন্য সর্বোচ্চ শাস্তির ব্যবস্থা করেছে। এর ফলে মাদক আগ্রাসনের গতি কিছুটা রোধ করা গেলেও এ অবৈধ ব্যবসা যে বন্ধ হয়নি তা এক বাস্তবতা। মাদক ব্যবসায় লাভের পাল্লা খুব ভারী হওয়ায় যেসব দেশে মাদক ব্যবসা ও পাচারের শাস্তি মৃত্যুদন্ড সেসব দেশেও তা বন্ধ করা সম্ভব হচ্ছে না। এ প্রেক্ষাপটে মাদকবিরোধী লড়াইয়ের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সবাইকে আরও দৃঢ় মনোভাবের পরিচয় দিতে হবে।